ঝিনাইদহ- ৩ আসনে প্রকাশ্যে ও গোপনে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা
জাহিদুল ইসলাম, ঝিনাইদহের চোখ—
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-৩ আসনে নৌকা মার্কায় মহাজোট প্রার্থী প্রকাশ্যে এবং ধানের শীষ মার্কায় ঐক্যফ্রন্ট এর প্রার্থী নেতা-কর্মীদেরকে সাথে নিয়ে গোপনে নির্বাচনী কর্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা মার্কায় এ্যাড. শফিকুল আজম খাঁন চঞ্চল এবং ঐক্যফ্রন্ট এর প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষের অধ্যাপক মতিয়ার রহমান মনোনয়ন পেয়েছেন।
জনগণের মতে জানা যায়, আরো প্রার্থী থাকলেও মুলতঃ এই দুই জোটের মধ্যে প্রতিদ্বীতা হবে। গত কয়েক দিনে মহাজোট প্রার্থী বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের সাথে মত বিনিময় সম্পন্ন করেছেন। এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় অব্যাহত রেখেছেন। অপরদিকে ঐক্যফ্রন্টের ৪ জন প্রার্থী ধানের শীষের দাবিদার থাকায় তাদের কার্যক্রম ঝিমিয়ে ছিলো।
শনিবার ঐক্যফ্রন্ট এর প্রার্থী চুড়ান্ত হলে তারা গোপনে কার্যক্রম শুরু করেছে। এই আসনটি নিয়ে দুই জোটই তাদের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, ১৯৭১ সালের পর ১০টি সংসদে আ’লীগ ৩ বার, বিএনপি ৪ বার (১টি বিতর্কীত) জামায়াত ২ বার, জাতীয় পার্টি ১ বার প্রতিনিধিত্ব করে। আসনটি দীর্ঘদিন জামায়াত-বিএনপির দখলে ছিল।
হিসাব-নিকাশ করে দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় আ’লীগের বে-দখল ছিল এই আসনটি। টানা ১০ বছর আ’লীগ ক্ষমতায় থাকায় সাংগঠনিক অবস্থা মজবুত হয়েছে। নেতা কর্মীরা দাবী করছে তাদের ভোট বৃদ্ধি পেয়েছে এবং একটি ভোট ব্যাংক তৈরি হয়েছে। অপর দিকে এই আসনটি জামায়াত-বিএনপির আসন হিসেবে পরিচিত। কারণ বিগত ৬ বার আসনটি তাদের দখলে ছিল। শুধুমাত্র বিগত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের এমপি নির্বাচিত হলেও মহেশপুর-কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাচনে-চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় জাময়াত ও বিএএনপির প্রার্থী। অপর দিকে বিগত ইউপি নির্বাচনে এ আসনে ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৫টিই আ’লীগের দখলে। জামায়াত পেয়েছে ২টি। এই আসনে কোটচাঁদপুর-মহেশপুর পৌরসভা ২টি বর্তমানে আ.লীগের দখলে।
এই আসনটি ফিরে পেতে জামায়াত-বিএনপি মরিয়া হয়ে উঠেছে । আসনটি পুনরায় উদ্ধার করতে চায় তারা। অন্যদিকে আ’লীগ এই আসনটি টিকিয়ে রাখতে তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে টিকে থাকতে চায়।
উপজেলা আ.লীগের সাধারন সম্পাদক ময়জদ্দীন হামীদ এ বিষয়ে বলেন, বর্তমানে আ’লীগের আগের থেকে সাংগঠনিক শক্তি অনেক বেশী। বিগত ১০ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের যে, উন্নয়ন হয়েছে তাতে জনগন খুশি। তারা সন্ত্রাসবাদ ও নাশকতা চায় না। দলের মধ্যে বর্তমানে কোন বিভেদ নেই। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সবাই এখন ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই আসনটি তাদের পক্ষে ধরে রাখা সম্ভব।
সাবেক এমপি ও বর্তমান মহাজোট প্রার্থী এ্যাড. শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন, তিনি সকল নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে ময়দানে কাজ করছেন। সকল নেতা-কর্মী নৌকাকে বিজয়ী নিশ্চত করতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করছে।
এবিষয়ে বিএনপির সাবেক উপজেলা সাধারন সম্পাদক মহি উদ্দীন বলেন, আমাদের প্রার্থী দেখার সুযোগ নেই। ধানের শীষ কে বিজয়ী করতে আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
বিএনপির সাধারনস সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুর রহমান বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এই আসনে ধানের শীষ বিজয়ী হবে। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী অধ্যপক মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে একাধীক মামলা থাকায় তাকে আজ পর্যন্ত প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।