ঝিনাইদহ বাজার, হোটেল ও শপিং মলে পর্যাপ্ত টয়লেট নেই
শাহজাহান আলী বিপাশ
ঝিনাইদহের ছয়টি উপজেলা ও পৌরসভার শহরের হোটেল- রেস্টুরেন্ট ও শপিং মল/বাণিজ্যিক গুলোতে পর্যাপ্ত টয়লেট ও ওয়াস রুমের ব্যবস্থা নেই। যার কারনে বাজারে কেটা কাটা কিংবা হোটেল রেস্টুরেন্ট এ খেতে গিয়ে বিপাকে পড়ছে নারী ও শিশুরা। বেশি সমস্যা হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে। স্থানীয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ যে কটি হাতে গোনা গণ টয়লেট তৈরি করেছে তার পরিবেশ একেবারেই ভাল না। কয়েকটি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে শপিংমল, বড় বিপনী কেন্দ্র, হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোর মালিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করে তাদের টয়লেট তৈরির অনুরোধ জানিয়েছে। বিষয়টি জনগুরুত্বপুর্ণ বিষয় হওয়ায় পৌরসভার স্যানিটেরী ইন্সেপেক্টররা প্রতিনিয়ত লিফলেট বিতরন করছে।
জানা যায়, ঝিনাইদহ জেলায় মোট ৬টি উপজেলায় ৬৭টি ইউনিয়নে বাজার ও ৬টি পৌরসভায় বড় শহর রয়েছে। এরমধ্যে ঝিনাইদহ সদর, শৈলকুপা, হরিণাকুন্ডু, মহেশপুর, কোটচাদপুর, কালীগঞ্জ ও হরিণাকুন্ডু পৌরসভার বড় বাজারগুলোতে সাধারণত গ্রামের সর্বসাধারন মানুষ প্রতিনিয়ত বাজারে আসে। এদের মধ্যে অর্ধেকই নারী ও শিশু। বিভিন্ন উৎসবে আরো বেশি সংখ্যত নারী ও শিশুরা কেনা কাটা করতে আসে। সেসকল শপিং মল কিংবা বিপনী বিতানে তার অধিকাংশতেই টয়লেট ও ওয়াস রুম নেই। প্রয়োজনীয় কাজে নারী ও শিশুরা বিপাকে পড়ে যায়। পৌর কর্তৃপক্ষ কয়েকটি গণ শৌচকার বা গণ টয়লেট তৈরি করলেও সেগুলো ব্যবহারের অনুপোযোগির কারনে নারী ও শিশুরা ব্যবহার করতে পারে না।
অপর দিকে ঝিনাইদহ জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলা শহরে যে হোটেল রেস্টুরেন্ট রয়েছে সেগুলোর অধিকাংশ তেই নেই টয়লেট ও ওয়াস রুম। হোটেল রেস্টুরেন্ট তৈরির প্রথম শর্ত হচ্ছে নিজস্ব ওয়াস রুম থাকতে হবে। তাও আবার রান্নার স্থান থেকে অনেক দুরে। কিন্তু হোটেল রেস্টুরেন্ট মালিকরা তা মানছে না। কিছু কিছু আধুনিক মানের হোটেল রেস্টুরেন্টে ওয়াসরুম থাকলেও তা পর্যাপ্ত না।
বিভিন্ন পৌরসভার সুত্র মতে, ঝিনাইদহ সদর পৌরসভায় ৯৭টি তালিকাভুক্ত হোটেল রেস্টুরেন্ট রয়েছে। কালীগঞ্জ পৌরসভায় রয়েছে ৩৩ টি। কোটচাদপুর পৌরসভায় রয়েছে ৩২টি। হরিণাকুন্ডু পৌরসভায় রযেছে ২৮টি। শৈলকুপা পৌরসবায় রয়েছে ৩৫ টি হেটেল রেস্টুরেন্ট। এর মধ্যে শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ হোটেল রেস্টুরেন্টটে টয়লেট ও ওয়াস রুম নেই।
কোটচাদপুর পৌরসভার স্যানেটারী ইন্সপেক্ট আজিজুর রহমান জানান, তিনি এই পৌরসভায় নতুন যোগদান করেছেন। এ পৌরসভার অধিনে ৩২টি হোটেল রয়েছে। তবে হিসাব মোতাবেক শতকরা ৩০ শতাংশ হোটেল রেস্টুরেন্টে টয়লেট বা ওয়াশ রুম নেই। আমরা পৌরসভার উদ্যগে কয়েকটি গণ শৌচগার নির্মাণ করেছি। আর বাণিজ্যিক কেন্দ্র ও হোটেল রেস্টুরেন্ট মালিকদের তৈরি করার জন্য জানিয়েছি।
কালীগঞ্জ পৌরসভার স্যানেটারী ইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন জানান, তারা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও হোটেল রেস্টুরেন্টে টয়লেট ও ওয়াস রুম তৈরির জন্য ইতিমধ্যে সকলকে নিয়ে মতবিনিময় করেছি। কালীগঞ্জ শহরে ৪টি গণ শৌচগার নির্মাণ করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ পৌরসভার সচিব মোস্তাক আহমেদ জানান, ঝিনাইদহ পৌরসভা এলাকায় নতুন যে সকল হোটেল রেস্টুরেন্ট কিংবা শপিং মল তৈরির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে সেগুলোর প্রথম শর্ত টয়লেট থাকতে হবে। তিনি বলেন, শহরের প্রায় অধিকাংশ হোটেল রেস্টুরেন্টে টয়লেট ও ওয়াশ রুমের ব্যবস্থা করা হযেছে। এছাড়াও ভ্রাম্যমান কয়েকটি টয়লেট ও ওয়াস রুম রয়েছে পৌরসভার আওতায়।
কালীগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান, আমরা ইতিমধ্যে শতভাগ বাণিজ্যিক কেন্দ্র, শপিং মল ও হোটেল রেস্টুরেন্টে টয়লেট,ওয়াস রুম ও সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য মতবিনিময় করে জানিয়েছি। সকল দোকান মালিককে ইতিমধ্যে চিঠি প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলে,সত্যিই দুর্ভোগে পড়ে নারী ও শিশুরা। এ পৌরসভায় শতভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে স্যানেটারী ব্যবস্থা করা হবে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাম্মী ইসলাম জানান, সদর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বাজারে হাট ইজারা দারদের মাধ্যমে টয়লেট স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়াও নতুন নতুন যে সব মার্কেট বা হোটেল রেস্টুরেন্ট তৈরি করা হচ্ছে সকলকে বলে দেওয়া হচ্ছে যাতে টয়লেট বা ওয়াস রুম থাকে । তিনি বলেন সরকারি বরাদ্দে পর্যায়ক্রমে টয়লেট স্থাপন করা হবে আর এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।