পরিচিত উপাদানেই নিয়ন্ত্রণ করুন ডায়বেটিস
ঝিনাইদহের চোখঃ
ক্রমবর্ধমান শারীরিক সমস্যার মাঝে ডায়বেটিস থাকবে একদম প্রথম সারিতে। টাইপ-২ ডায়বেটিসে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তবে আশঙ্কাজনক তথ্য হলো- ল্যানচেট পত্রিকায় সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত হওয়া একটি গবেষণার তথ্য জানাচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ পুরো বিশ্বে ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৯৮ মিলিয়নে!
ডায়বেটিসকে বলা হয়ে থাকে ‘লাইফস্টাইল ডিজিজ’। কারণ অনিয়ম ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের ফলে খুব সহজেই ডায়বেটিসে আক্রান্ত হবার সম্ভবনা থাকে। অপরদিকে নিয়ন্ত্রিত জীবন ব্যবস্থা ও খাদ্যাভাস্যের মাধ্যমে সহজেই ডায়বেটিসের প্রকোপ কমিয়ে রাখা যায়।
প্রাকৃতিক বেশ কিছু কমন মশলা ও উদ্ভিজ উপাদান আছে যা প্রাকৃতিকভাবে কোন পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ছাড়াই রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
‘হিলিং স্পাইসেস’ বইটির লেখক ডঃ ভারত বি. আগরওয়াল জানান ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য একটি প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহারই যথেষ্ট। সেটা হলো রসুন। জার্নাল অফ নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি গবেষণা জানায়, কাঁচা রসুনের রস ডায়বেটিস ও অথেরোস্ক্লেরোসিস (এক প্রকারের আর্থ্রাইস) দেখা দেওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ডায়বেটিস শরীরের বেশ কয়েক ধরণের প্রদাহকে প্রশমিত করতে কাজ করে। যার মাঝে অথেরোস্ক্লেরোসিস হলো অন্যতম একটি।
অন্যদিকে রসুনের রসে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি তথা প্রদাহবিরোধী উপাদান ডায়বেটিস ও ডায়বেটিজজনিত প্রভাব ও জটিলতাকে কমায়। এক্ষেত্রে কাঁচা রসুনের সর বেশি কার্যকরি হলেও, ভাজা ও রান্না করা রসুনের রস থেকেও উপকার পাওয়া যাবে।
ডায়বেটিসের জন্য কেন রসুনের রস কার্যকরি?
রসুনে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যালিসিন, অ্যালাইল ডিসালফাইড ও এস-অ্যালাইল সিস্টেইন সালফক্সাইড। সালফরাস ঘরানার এই সকল উপাদান শুধুই অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাংগাল উপাদান নয়, এই উপাদানগুলো রক্তে ইনস্যুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কাজ করে।
‘হিলিং ফুডস’ নামক বইয়ের তথ্যমতে, নিয়মিত রসুন গ্রহণে ডায়বেটিস ও হৃদরোগের সম্ভবনা হ্রাস হয়। এছাড়া স্বল্প ক্যালোরি ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক উপাদান রসুন নিয়মিত খাওয়ার ফলে সুস্থ থাকা সম্ভব হয় দীর্ঘদিন পর্যন্ত।
এছাড়া ভিটামিন-বি ও সি সমৃদ্ধ রসুনের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলক কম হওয়ায় ডায়বেটিস রোগীদের নিয়মিত রসুনের রস খাওয়া প্রয়োজন। রসুনের রস রক্তে চিনির মাত্রা হুট করে বেড়ে যেতে বাঁধাদান করে। ফলে অকস্মাৎ ডায়বেটিস বেড়ে যাওয়ার সমস্যাটি সহজে দেখা দেয় না।