ঝিনাইদহের চোখঃ
প্রথমে ডান পাঁয়ের একটি আঙ্গুলে ছোট্ট একটি ফোট, তারপর পচন শুরু।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন দ্রুত আঙ্গুলটি কেটে ফেলতে হবে। এর জন্য ২৫ হাজার টাকা খরচ হবে। সামান্য এই টাকা জোগাড় করতে না পেরে পচন ধরা আঙ্গুলটি কাটতে পারছেন না হতদরিদ্র মিন্টু সর্দ্দার। আর কাটতে না পারার কারনে আঙ্গুলের পচন আস্তে আস্তে পাঁয়ের দিকে এগিয়ে আসছে। মিন্টু সর্দ্দারের আশংকা একটি সময় হয়তো তার গোটা পাঁয় কেটে ফেলতে হবে।
মিন্টু সর্দ্দার (২৮) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মহেশ^রচাঁদা গ্রামের কোরবান আলী সর্দ্দারের পুত্র। তিনি পেশায় একজন হোটেল শ্রমিক। তার বাবা অসুস্থ হওয়ায় মা রহিমা খাতুন নির্মান শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান। রহিমা খাতুন জানান, তাদের কোনো জায়গা জমি নেই। মাত্র ৪ শতক জমির উপর টিনের ছাপড়া করে বসবাস করেন। ছেলে মিন্টু সর্দ্দার একটি হোটেলে শ্রমিকের কাজ করে। তাকে বিয়েও দিয়েছেন রহিমা। বর্তমানে মুন্ন ও মুন্নি নামে তার দুইটি সন্তান রয়েছে।
রহিমা খাতুন জানান, অত্যান্ত কষ্ট করে চলে তাদের সংসার। ছেলের সঙ্গে তিনিও অন্যের বাড়িতে নির্মান শ্রমিকের কাজ করেন। তাদের দুইজনের আয়ে কোনো রকমে সংসার চলে। এই অবস্থায় চার মাস হলো ছেলের ডান পায়ের একটি আঙ্গুলে একটি ফোট দেখা দেয়। মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে সেখানে পচন দলে যায়। তিনি ছেলেকে নিয়ে স্থানিয় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা দেখে দ্রুত আঙ্গুলটি কেটে ফেলার জন্য বলেন। এ জন্য ২৫ হাজারের মতো টাকা খরচ হবে বলে জানায়।
রহিমা খাতুন জানান, একসঙ্গে এতোগুলো টাকা জোগাড় করতে পারেননি। তাই ছেলেকে নিয়ে গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে গেছেন। কখনও কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসার চেষ্টা করেছেন। এতে তার প্রায় ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি জানান, অনেক চেষ্টা করেও ২৫ হাজার টাকা জোগাড় করতে পারছেন না। তাই তার ছেলের পাঁয়ের আঙ্গুল কাটতে পারছেন না।
মিন্টু সর্দ্দার জানান, পচন ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। আঙ্গুল থেকে পাঁয়ের পাতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সারাক্ষণ যন্ত্রনা করে তার পাঁয়ে। তার আশংকা গোটা পাঁ কেটে ফেলতে না হয়।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুস সাত্তার জানান, এ জাতীয় রোগির পাঁয়ের আঙ্গুল সরকারি হাসপাতালে কাটা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ঔষধপত্র মিলিয়ে ১০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। আর বে-সরকারি হাসপাতালে খরচ হবে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, এ জাতীয় রোগির দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ক্রমেই খারাপের দিকে চলে যায়।