অন্যান্য

ক্লান্তিটা যখন শারীরিক নয়, মানসিক!

ঝিনাইদহের চোখঃ

জীবনে বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয় সবাইকেই।

বিপদ ও আশঙ্কার মাঝে কাটাতে হয় অনেকগুলো সময়। দীর্ঘদিন মানসিক চাপের মুখে থাকার ফলে পরিবর্তন আসে মানসিক অবস্থায় ও আবেগে। ক্লান্তি ভর করে শরীরে, বিষণ্ণতার ছায়া পড়ে মনের উপর। নিজেকে জোর করে এই সময়গুলোতে প্রাণবন্ত ও হাসিখুশি রাখার সকল চেষ্টাই যেন বৃথা হয়ে যায়। জীবনের ইতিবাচক দিকগুলোর প্রতি মনোযোগ দিতে চাইলেও, দিনশেষে দেখা যায় ফলাফল শূন্য।

বারংবার যে ক্লান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে সেটাকে শারীরিক ক্লান্তি হিসেবে ধরে নিলেও, এই ক্লান্তিটা আসলে মানসিক। দীর্ঘদিনের মানসিক বিষাদ ও বিষণ্ণতার ভারে শরীর নয়, ক্লান্ত হয়েছে পড়েছে মন। শারীরিক ক্লান্তির জন্য যেমন বিশ্রামের প্রয়োজন হয়, অনুরূপভাবে মানসিক ক্লান্তির জন্যেও প্রয়োজন বিশ্রাম ও যত্ন।

কিন্তু আপনার ক্লান্তিটা যে আসলে শারীরিক নয় সেটা বুঝবেন কীভাবে? মানসিক ক্লান্তির ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণীয় লক্ষণ প্রকাশ পায়। তেমন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ জানানো হলো।

১. দিনের বেশিরভাগ সময় বিশ্রাম নিতে ও শুয়ে থাকতেই ইচ্ছা করবে। সারাদিনেই ঘনঘন ঘুম পাবে। তবে রাতের বেলা ঘুম ভাব হালকা হয়ে যাবে এবং প্রচন্ড অস্থিরতা দেখা দিবে। কোনক্রমে ঘুমিয়ে পড়লেও দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যাবার মতো সমস্যা দেখা দিবে।

২. মানসিক ক্লান্তির ছাপ শরীরেও পড়ে। ফলে সমস্ত শরীরে ব্যথাভাব দেখা দেওয়া শুরু করবে। শারীরিক ব্যথাভাবের সঙ্গে মাথা ঘোরানো, পেটে ব্যথা, ঘোলা দেখা ও অকারণে প্রচন্ড মাথাব্যথা হবে।

৩. কুশলাদি জানতে চাইলে সঠিকভাবে কোন উত্তর দিতে পারবেন না। ‘কেমন আছেন’? খুব সহজ স্বাভাবিক প্রশ্নটাও তখন জটিল বলে মনে হবে। কারণ আসলেও আপনি জানেন না, আপনি কেমন আছেন, কেমন বোধ করছেন! মন ও মাথার ভেতর কি কাজ করছে, সেটা আপনি নিজেও জানেন না সঠিকভাবে। কারণ নিজের অনুভূতিগুলোকে পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করার মতো কোন শব্দ জানা নেই আপনার।

৪. ভালো ও সুস্থ থাকার জন্য শরীর ও মনের মেলবন্ধন খুবই জরুরি। অথচ আপনার শারীরিক অবস্থা ও মানসিক অবস্থার মাঝে কোন সামঞ্জস্যতা নেই একেবারেই। অকারণেই বিচলিত বোধ করা, অস্থিরতা যেন নিত্য সঙ্গী।

৫. হুট করেই খুব আবেগশূন্য হয়ে যাবে মন। কোন ঘটনাই মনকে স্পর্শ করতে পারবে না। আবার হুট করেই অকারণে মন অনেক বেশি আর্দ্র হয়ে উঠবে। তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণেও মন খারাপ হয়ে যাবে, চোখে পানি আসবে।

৬. ঘনঘন প্যানিক অ্যাটাক হবে ও সর্বক্ষণ দুশ্চিন্তা ঘুরবে মাথায়।

৭. সবসময় অনেক মানুষের মাঝে থাকার পরেও নিজেকে খুব বেশি একা বলে মনে হবে। কারোর সঙ্গে কথা বলার মতো ইচ্ছাও দেখা দিবে না। কেউ আগ্রহ নিয়ে কথা বলতে চাইলেও বিরক্তি দেখা দিবে।

৮. হুট করেই প্রচন্ড রাগ উঠবে। অথচ রাগ ওঠার পেছনে যুক্তিযুক্ত কোন কারণ, কোন ঘটনা খুঁজে পাওয়া যাবে না। রাগের সঙ্গে ঈর্ষাকাতরতা ও ঘৃনাবোধ বৃদ্ধি পাবে।

লক্ষণগুলো কি আপনার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে? তবে সবার প্রথমে নিজেকে সময় দিন, নিজের যত্ন নিন, নিজেকে বুঝতে চেষ্টা করুন। যে কাজগুলো করতে ভালোলাগে সেটার সঙ্গে নিজেকে ব্যস্ত করে তুলুন। পছন্দের গান, পছন্দের খাবার ও পছন্দের মানুষের সঙ্গে সময় কাটান। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের সমস্যা, নিজের মানসিক অবস্থা নিয়ে কোন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button