ঝিনাইদহ সদরদেখা-অদেখা

ঝিনাইদহে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য লাঙল দিয়ে হাল চাষ

চঞ্চল মাহমুদ, ঝিনাইদহের চোখঃ

বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের ছোঁয়াও লেগেছে কৃষিতে। তাই তো কৃষি ছোঁয়ায় দেখা যায় বেশ পরিবর্তন।

তাই আর ঝিনাইদহ জেলা সহ আশে পাশের জেলা গুলোর গ্রামগঞ্জে সকালে কাঁধে লাঙল-জোয়াল আর জোড়া গরুর দড়ি হাতে নিয়ে মাঠে যেতে আর দেখা যায় না কৃষকদের। তাই দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য লাঙল দিয়ে হাল চাষ।

কৃষি প্রধান বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লাঙল, জোয়াল। আধুনিকতার সঙ্গে সঙ্গে হাল চাষের পরিবর্তনে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করা হয়। এক সময় দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে কৃষক গরু পালন করত হাল চাষ করার জন্য।

আবার কিছু মানুষ গবাদিপশু দিয়ে হাল চাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে ছিলেন। আবার অনেকে তিল, সরিষা, কলাই, আলু চাষের জন্য ব্যবহার করতেন। নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হাল চাষ করে তাদের সংসারের ব্যয়ভার বহন করত।

হালের গরু দিয়ে দরিদ্র মানুষ জমি চাষ করে ফিরে পেত তাদের পরিবারের সচ্ছলতা।আগে দেখা যেত কাকডাকা ভোরে কৃষক গরু, লাঙল, জোয়াল নিয়ে মাঠে বেড়িয়ে পড়ত।

এখন আর চোখে পড়ে না গরুর লাঙল দিয়ে চাষাবাদ। জমি চাষের প্রয়োজন হলেই অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়ার টিলারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চালাচ্ছে জমি চাষাবাদ।

তাই কৃষকরা এখন পেশা বদলি করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে গরু, লাঙল, জোয়াল দিয়ে জমিতে হাল চাষ। ঝিনাইদহ জেলার সিমান্ত জীবনা গ্রামের কৃষক মিলন মিয়া জানান, আধুনিক যন্ত্রপাতির থেকে গরুর লাঙলের চাষ বেশ ভাল হয়।

জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি ও ফসলের চাষাবাদ করতে সার, কীটনাশক সাশ্রয় পায়। কষ্ট হলেও গরু দিয়ে হাল চাষ করতে খুব ভালো লাগত। এখন মনে পড়লেই কষ্ট হচ্ছে। ফিরে পাব না আর সেই পুরনো দিনগুলো। এভাবেই ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button