হাঁটার যত উপকারিতা
ঝিনাইদহের চোখ ডেস্কঃ শরীর সুস্থ রাখতে পুষ্টিকর খাবার যেমন দরকার; তেমনি শরীরেও যত্ন নেওয়া দরকার। সময়ের অভাবে অনেকেই নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন না। এক্ষেত্রে হাঁটা বেশি উপকারী। দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
আপনি কি খুব অল্পেই ক্লান্ত বোধ করেন? অল্পেই আলস্য আসে কাজে? ঘন ঘন মেজাজ হারান? দুর্বল লাগে? এ রকম অনেক সমস্যাই কাটিয়ে উঠতে পারেন প্রতি দিন হাঁটার অভ্যাস করে। ফিটনেস এক্সপার্টরা জানাচ্ছেন, রোজ মাত্র ১৫ মিনিট হাঁটালেই উপকার পাবেন।
যদি আপনার বয়স তিরিশের আশপাশে হয় তা হলে মাথায় রাখবেন এই বয়স থেকেই কিন্তু আমাদের হাড় দুর্বল হতে থাকে। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।
হাঁটলে প্রাকৃতিকভাবে পাবেন সুস্থতা ও প্রাণবন্ত অনুভূতি। রয়েছে শত উপকারও। আর সবচেয়ে সহজ ব্যায়ামও হচ্ছে হাঁটা। নিম্নে হাঁটার কিছু উপকারিতা তুলে ধরা হলো।
সুস্থ হৃদপিণ্ড, সুন্দর জীবন
যারা নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন তাদের হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। এ ছাড়া হাঁটার সময় শরীর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এলডিআর কমে যায় ও ভালো কোলেস্টেরল এইচডিআর-এর মাত্রা বেড়ে যায়। এ ছাড়া শরীরের রক্তচলাচল স্বাভাবিক থাকে।
সুস্থতা বাড়বে
যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, ডাক্তারের পরামর্শে তারা নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন। এতে অবশ্য তারা উপকার পান। মজার কথা হলো- এতে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন রকম ব্যায়াম করতে দেখা যায়। যদি ওজন কমাতে চান, তবে প্রতিদিন ৬০০ ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলতে হবে। যেটা একদিনের খাবার থেকে প্রাপ্ত ক্যালরির চেয়ে বেশি। যার ওজন ৬০ কেজি তিনি যদি প্রতিদিন ঘণ্টায় ২ মাইল গতিতে ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করেন। তবে ৭৫ ক্যালরি শক্তি ক্ষয় করতে পারেন। যদি ঘণ্টায় ৩ মাইল গতিতে হাঁটতে অভ্যস্ত হন তবে, ৯৯ ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলতে পারেন। ঘণ্টায় ৪ মাইল গতিতে হাঁটলে আরও বেশি ক্যালরি ক্ষয় করতে পারবেন। এতে ক্যালরি ক্ষয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৫০। হাঁটলে দেহের পেশীগুলো আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
স্মৃতিশক্তি বাড়ে
বয়স বাড়ার সঙ্গে সাধারণত মানুষের স্মৃতিশক্তি কমে যায়। ৬৫ বা এর বেশি বয়সীদের মধ্যে প্রতি ১৪ জনের মধ্যে ১ জনের স্মৃতিভ্রম হয়। আর ৮০ বা এর বেশি বয়সীদের ৬ জনের মধ্যে ১ জনের দেখা দেয় স্মৃতি হারানোর রোগ। নিয়মিত বিভিন্ন ব্যায়াম অনুশীলনে মস্তিষ্কে রক্তচলাচল বাড়ে। এতে স্মৃতিহানি হওয়ার ঝুঁকি ৪০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। যুক্তরাজ্যে এক গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্কদের মধ্যে যারা সপ্তাহে অন্তত ৬ মাইল পথ হাঁটেন তাদের স্মৃতিশক্তি অটুট থাকে।
ব্যথার ঝুঁকি নেই
নিয়মিত হাঁটাচলা করলে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথার ঝুঁকি কমে যায়। সাধারণত বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের শরীরের বিভিন্ন হাড় ও সংযোগস্থলে ব্যথা করে। শরীরের জয়েন্টগুলোকে সুস্থ রাখতে হাঁটা নিঃসন্দেহে খুবই কার্যকর ব্যায়াম।
পায়ের শক্তি বাড়ায়
হাঁটলে শুধু পায়ের শক্তিই বাড়ে না পায়ের আঙুলেরও ব্যায়াম হয়। এছাড়া কোমর এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ নড়াচড়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই সুস্থ থাকে।
পেশিশক্তি বাড়ে
হাঁটলে শুধু পা চলে না দুহাতও সমান তালে চলে। এতে হাতের প্রতিটি জয়েন্ট, ঘাড় ও কাঁধের ব্যায়াম হয়। ব্যাকপেইনের সমস্যা কমে যেতে পারে নিয়মিত ব্যয়ামের মাধ্যমে।
প্রাণবন্ত শরীর ও মন
সকালের প্রকৃতি এমনিতেই থাকে স্নিগ্ধ। এ সময় হাঁটার মজাই আলাদা। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের সময় মন স্বাভাবিকভাবেই ফুরফুরে থাকে, শরীর ও মন সতেজ হয়। শরীরের প্রতিটি জয়েন্টে অক্সিজেনের প্রাণপ্রবাহে মাংসপেশীগুলো শিথিল ও রিলাক্সড হয়।