ঝিনাইদহে এসএসসি’র প্রবেশপত্র বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগ
ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষা মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরনে বোর্ড কতৃক নির্ধারিত ফিস ছাড়া পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণে অতিরিক্ত ৯৫০ টাকা করে অর্থ হাতানো হচ্ছে।
এ ঘটনায় অধিকাংশ অবিভাবক মুখ না খুললেও অনেক অবিভাবক ও শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রবেশপত্র বিতরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনা ফাঁস হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী উঠেছে এ ঘটনায় তদন্তপূর্বক জড়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয় সূত্রে জানাযায়, ২০১৯ সালের আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় কোটচাঁদপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয় থেকে ১৭১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিবেন। ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারীদের ফরম পূরনের সময়সীমা।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে জানাযায়, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান শাখায় সরকারী ফিস নির্ধারন করা হয়েছে ১ হাজার ৩’শ ৮৫ সহ সর্বসাকুল্যে ১হাজার ৮’শ টাকা। অপরদিকে ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখায় বোর্ড ফিস ১হাজার ২’শ ৯৫ এবং কেন্দ্র খরচসহ সর্বমোট নির্ধারন করা হয়েছে ১হাজার ৬’শ ৮০ টাকা।
এদিকে নির্ধারিত ফিস জমা দেওয়ার পরও প্রবেশপত্র বিতরণে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহনের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অবিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানায়, ফরম পূরনের সময় বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফিস নেওয়া হলেও পরবর্তিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাদেরকে জানিয়ে দেন পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে চাইলে অতিরিক্ত ৯৫০ টাকা দিতে হবে। না হলে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারবে না।
এমনকি পরীক্ষার্থীর নিকট অতিরিক্ত টাকা গ্রহনের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র বোর্ড-ফি’র টাকা গ্রহনের রশিদ হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসাহাক আলী অতিরিক্ত অর্থ গ্রহনের বিষয়ে বলেন, বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফিস ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার সুযোাগ নেই। মহামান্য হাইকোর্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা দেওয়া হয়েছে। তবে পরবর্তিতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৯৫০ টাকা নেওয়ার ব্যাপারে বলেন, বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানের নানা সমস্যা থাকার কারনে, এবং বিদ্যালয়ের নানা বিষয়ে উন্নয়নের জন্য এ অর্থ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কাহারো প্রতি কোন প্রকার চাপ নেই।
এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রতন মিয়া জানান, প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য সরকারীভাবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম নাই। যদি কোন শিক্ষার্থী বা অবিভাবক কিছু দিতে চায় তাহলে কোন বিষয় না। তবে, এ ব্যাপারে কাউকে চাপ প্রয়োগ করার কোন সুযোগ নাই।
অতিরিক্ত অর্থ গ্রহনের বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজনীন সুলতানা বলেন, এ ব্যাপারে কোন প্রমাণ পাওয়া না গেলেও বিষয়টি আমি জানার পর অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য যদি কোন শিক্ষার্থী কিছু অনুদান দেয় সে জন্য সবাইকে বলা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কাউকে চাপ দেওয়া হচ্ছে না।