কালীগঞ্জটপ লিড

ঝিনাইদহে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনা

তারেক মাহমুদ, ঝিনাইদহের চোখঃ

নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারে বদলে যাচ্ছে দেশের কৃষি। প্রতিনিয়ত টেকশই প্রযুক্তির ব্যবহারে নতুন সাম্ভাবনার দার উন্মোচিত হচ্ছে দেশীয় কৃষিতে। এরকমই এক প্রযুক্তি বাউকুলে পলিথিনের ব্যবহার কুল চাষে নতুন সাম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ৬ থেকে ৭ টি কুলে এক কেজি ওজন হচ্ছে। দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। সাধারন ভাবে উৎপাদিত বাউকুল কেজি বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৭০ টাকা। আর পলিথিন পদ্ধতিতে উৎপাদিত কুল প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার রাখালগাছি-চাঁদপাড়ার মাঠে হারুনার রশিদ নামে এক কৃষক বাউকুলে পলিথিন ব্যবাহর করে এরকমই সফলতা পেয়েছেন। হারুন কালীগঞ্জ উপজেলার সানবান্ধা গ্রামের মৃত শাহাদত হোসেনের ছেলে। কুলে পলিথিন ব্যবহারের ফলে কোন কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। ফলে বিষমুক্ত এই কুল সাধারন বাউকুলের থেকে মিষ্টি ও নরম। যে কারনে বাজারে চাহিদাও বেশি।

হারুনার রশিদ জানান, আমি গত ১০ বছর ধরে বাউকুল সহ বিভিন্ন প্রজাতির কুল ও পেয়ারার চাষ করে আসছি। এবছর আমার সাড়ে চার বিঘিা জমিতে বাউকুলের চাষ রয়েছে। আমার মনে হয়েছিল পেয়ারায় পলিথিন পদ্ধতি ব্যবহার করে যদি ভালো উৎপাদন হয়। তাহলে কুলে পলিথিন ব্যবহার ভালো ফলন হওয়ার কথা। এমন চিন্তা থেকে এবছর আমি প্রথম কুলে পলিথিন পদ্ধতি ব্যবহার করি। কিছুদিনের মধ্যে খুব ভালো ফলাফল লক্ষ্য করি। তারপর সমস্ত বাগানে পলিথিন ব্যবহার শুরু করেছি। পলিথিন বাধা, কুল সংগ্রহ ও পরিচর্যার কাজে প্রতিদিন ১০ শ্রমিক কাজ করেন বলে যোগ করেন এই সফল কৃষক হারুনার রশিদ। এখন পলিথিন ব্যবহারের উৎপাদিত কুলের সাইজ দেখে আমি নিজেই আশ্চর্য্য হচ্ছি।

প্রতিদিন বাগান থেকে ১০ থেকে ১২ মন কুল সংগ্রহ করছি। যে সব কুল ৮০ টাকা কেজি দরে ঢাকার বাজারের পাইকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। প্রথম কয়েকদিন ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করেছিলাম।
তিনি আরো বলেন, সাধারন ভাবে উৎপাদিত বাউকুল থেকে বছরের বিঘা জমিতে ২ লাখ টাকার মতো বিক্রি করা যায়। যা চারা রোপন থেকে শুরু করে ফল সংগ্রহ পর্যন্ত খরচ হয় ৩০ হাজার টাক। কিন্তু একই খরচে এই পলিথিন পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে এবছর বিঘা জমিতে তিন লাখের বেশি টাকার কুল বিক্রি করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই কুলচাষি।

কৃষি ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিয়ে কাজ করা বেসরকারী উন্নয়ণ সংস্থা বিকিশিত বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন কৃষক হারুনার রশিদকে নানাভাবে সহযোগীতা করছেন। বিকশিত বাংলাদেশের কর্মী আনোয়ারুল ইসলাম টিটু বলেন, বিষমুক্ত নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে কুল চাষের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ৪০০ কেজি ভার্মি কম্পোষ্ট, ২২টি ফেরেমন ট্রাফ, ফসল সংগ্রহের জন্য প্লাস্টিকের ত্রিপল ও বাস্কেট দেওয়া হয়েছে। এখন সংগ্রহ করা কুল ঢাকার বাজারের বিক্রির কাজে সহযোগীতা করা হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button