ঝিনাইদহে ৩৩২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ
ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর এবং স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান ও আন্তর্জাতীক মাতৃ ভাষা দিবসে বিন¤্রশ্রদ্ধার জন্য ঝিনাইদহে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার নিশ্চিৎ করা সম্ভব হয়নি। প্রতি বছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি আসলেই নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিনটি পারিত হয়। কিন্ত কোন কোন প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় আজও শহীদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাজ্ঞলি নিবেদন করতে পারেনা।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলায় সরকারি, বেসরকারি হিসাবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭’শ ৩৮ টি। সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ২’শ ৫৭ টি, প্রাথমিক ২’শ ১৫ টি, নন এমপিও ভুক্ত ১’শ ৫৪ টি, এবতেদায়ি, দাখিল, আলিম ও কামিল মাদ্রাসার সংখ্যা ১’শ ১২ টি। আর এসকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরকারি হিসাব মতে শহীদ মিনার আছে ৪’শ ৬ টি প্রতিষ্ঠানে। আর সদর উপজেলার ৪০ টি, কালিগজ্ঞে ৩৯টি, কোটচাঁদপুরে ১৪টি, মহেশপুরে ২০টি, শৈলকুপায় ৪৫টি, এবং হরিনাকুন্ডু উপজেলায় ২০টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এছাড়া জেলায় ১’শ ১২টি মাদ্রাসার মধ্যে মাত্র ১২ টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে।
তবে একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যে সকল স্থানে একই সাথে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ রয়েছে, সেখানেই সিন্ধান্ত অনুযায়ি একটি করে শহীদ মিনার রয়েছে। যে কারনে শহীদের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে সমস্যা থাকার কথা নয়। তবে এখন কয়েটি প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার থাকা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে নন এমপিও ভুক্ত শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক শওকত আলি বলেন, দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষক কর্মচারি বেতন না হওয়ায় চরম মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এরপরও কোন কোন প্রতিষ্ঠান ভাষা শহীদের সম্মানে নিজ খরচে শহীদ নিমার নির্মাণ করেছেন। তবে এখনও নন এমপিও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নেই বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি শাহ আলম জানান, আমর প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। যে কারনে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টের কেউই ভাষা শহীদদের প্রতি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বিন¤্রশ্রদ্ধা জানাতে পারেনা। তিনি আরো জানান, অতি পুরাতন ও গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানের বাউন্ডারি ও শহীদ মিনার অতীব জরুরী।
ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন বলেন, বছর দুয়েক আগে যে সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, তার তালিক্ াআমরা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মাধ্যকে দিয়ে ছিলাম। সে সময় অতি গুরুত্বের সাথে নেয়া হয়েছিল। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান এবং কোন কোন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, সভাপ্রতিসহ সংশ্লিষ্টদেরকে শহীদ মিনার নির্মানের জন্য বিশেষ ভাবে বলা হয়েছিল। কিন্তু পরে তালিকার বিষয়ে কোন কোন তথ্য আমাদেরকে জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার (মাধ্যমিক) বলেন, এখানে আমি আসার পর শহীদ মিনার নির্মানের ব্যপারে কোন আলোচনা বা তথ্য পাইনি। তবে আমি দেখেছি একাধিক প্রতিষ্ঠান ( প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্কুল এন্ড কলেজ, মাদ্রাসা) একই স্খানে, সেখানে একটি করে শহীদ মিনার আছে। শহীদ মিনার ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো জন্য নির্মান করা হয়। সেখানে সারা বছরই যেন পরিষ্কার ও মার্জিত ভাবে থাকে। সে বিষয়ে আমি শিক্ষকদের কঠোরও বিশেষ ভাবে বলেছি। তবে তিনি, নতুন খোঁজখবর নিবেন বলে তিনি জানান।