ধর্ম ও জীবন

ইসলাম পরস্পরের দোষারোপকে সমর্থন করে না

ঝিনাইদহের চোখঃ

ইয়াহুদিরা তাওরাত পড়তো, তাতে মুসা আলাইহিস সালামের জবানিতে ঈসা আলাইহিস সালামের সত্যয়ন ছিল, তা সত্ত্বেও ইয়াহুদিরা ঈসা আলাইহিস সালামকে অস্বীকার করতো। আবার খ্রিস্টানরা ইঞ্জিল পড়তো, তাতে মুসা আলাইহিস সালাম এবং তাওরাত যে আল্লাহর পক্ষ হতে আগত, তার সত্যয়ন ছিল। তা সত্ত্বেও খ্রিস্টানরা ইয়াহুদিদেরকে কাফের বলে মনে করতো। তাদের এহেন আচরণের বিষয় মুসলমানদের শিক্ষা গ্রহণের জন্য তুলে ধরে আল্লাহ বলেন-

ইয়াহুদিরা বলে, খ্রিস্টানদের কোনো (ধর্মীয়) ভিত্তি নেই এবং খ্রিস্টানরা বলে ইয়াহুদিদের কোনো (ধর্মীয়) ভিত্তি নেই। অথচ তারা উভয়েই কিতাব পড়ে। আর যাদের কাছে কিতাবের জ্ঞান নেই (অজ্ঞ), তারাও এভাবে কথা বলে। সুতরাং তারা যে বিষয়ে মতবিরোধ করছে, শেষ বিচারের দিন আল্লাহ তাআলা তাদের মাঝে মীমাংসা করবেন। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১১৩)

এ আয়াতে আহলে কিতাবদের উভয় দলের মাঝেই কুফরি, অবাধ্যতা এবং তাদের উভয়ের মাঝে মিথ্যার আশ্রয় এবং আনন্দে মত্ত থাকার অবস্থাই প্রকাশ পেয়েছে।

আবার আরবের মুশরিকরাও আহলে কিতাবদের নিরক্ষর (অশিক্ষিত) ছিল। মুশরিক হওয়া সত্ত্বেও ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের মতো মিথ্যা ধারণায় মত্ত ছিল যে, তারাই নাকি সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এ জন্য তারা বিশ্বনবিকে স্বাবি বা বে-দ্বীন বলতো (নাউজু বিল্লাহ)। অথচ আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারিমে তাদেরকে অজ্ঞ বা মুর্খ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

আরবের মুশরিকরা ওহি এবং নবুয়ত সম্পর্কে কোনো জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও আসমানি কিতাবের অনুসারীদেরকে কেউই সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত নয় বলে মন্তব্য করতো।

ইয়াহুদি, খ্রিস্টান ও মুশরিকদের দেখাদেখি বর্তমান সমাজের অসংখ্য নামধারী মুসলমান কুরআন নিয়ে দল-উপদলে বিভিক্ত হয়ে পড়েছে। একে অপরকে অজ্ঞ, ফাসিক, মুনাফিক, কাফির বলে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করছে। যা ইসলামে মারাত্মক গর্হিত কাজ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ ধরনের কাঁদা ছোড়াছুড়ি থেকে হিফাজাত করে, পূর্ববর্তী আসমানি কিতাব ও নবি-রাসুলদের ওপর বিশ্বাস রাখার পাশাপাশি কুরআনের বিধানের যথাযথ বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button