ধর্ম ও জীবন

‘হারাম’ সম্পর্কে ইসলামের বিধান

ঝিনাইদহের চোখঃ

ইসলামি শরীয়াতে হারাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সব আসমানি গ্রন্থেই হারাম সম্পর্কিত সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। হারামের বিধান প্রণয়ন করার ইখতিয়ার শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার বিধায় বাস্তবজীবনে হারাম কাজ থেকে বেঁচে থাকার নামই হচ্ছে ইবাদত। সংক্ষেপে হারামের পরিচয়, বিধান ও উদাহরণ তুলে ধরা হলো-

>> হারাম
ইসলামে যে কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তাকে হারাম বলে। অর্থাৎ কুরআনুল কারিম ও বিশ্বনবির হাদিসে যে সব কাজ ও বিষয়কে সুস্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ বা অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় তা হারাম বা অবৈধ।

অন্য কথায়- হারাম উপায়ে উপার্জিত অর্থ অবৈধ, ক্ষতিকারক, অকল্যাণকর কাজসমূহ; যা মানুষের জন্য অপকারের বা ক্ষতির কারণ। ঐ সব কাজ ও বিষয়সমূহকে আল্লাহ তাআলা হারাম ঘোষণা করেছেন।

>> হারামের বিধান
বিশ্বমানবতাকে দুনিয়ার যাবতীয় অকল্যাণ ও ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্যেই আল্লাহ তাআলা হারামের বিধান প্রদান করেছেন। যে ব্যক্তি হারাম কাজ করে তার অন্তর-আত্মা নষ্ট হয়ে যায়, দেহের ক্ষতি হয় এবং বিবেক বুদ্ধি লোপ পায়। যা নির্বুদ্ধিতার পরিচয় বহন করে।

এক কথায় হারাম কাজ মানুষকে গোনাহগার বানিয়ে দেয়। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা ইসলামে হারামের বিধান প্রণয়ন করে মানুষকে অশান্তির শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ থেকে নিষ্কৃতি দান করেছেন।

হারামের বিধান প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন- সে সব লোক; যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রাসুলের; যিনি উম্মী নবি; যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়; তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম (হারাম) থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষণা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের ওপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন; যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।’ (সুরা আ’রাফ : আয়াত ১৫৭)

>> হারামের উদাহরন
আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য শুকর খাওয়াকে হারাম করেছেন। কিন্ত কেউ যদি শুকরকে সুন্নত নিয়মে জবেহ করে তবুও তা হালাল হবে না বরং হারাম হবে। কারণ এখানে আল্লাহ তাআলার হুকুম নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তরীকায় জাবেহ করলেও তা বৈধ বা হালাল হবে না এবং ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে না।

এভাবে আল্লাহ তাআলা যে সব কাজ বা বস্ত হারাম করেছেন। হারাম কাজ করলে আল্লাহর শাস্তি নির্ধারিত বিধায় এ ধরনের কাজ বর্জন করাও বাধ্যতামূলক। যেমন- সুদ , ঘুস, বেপর্দা, হারাম ব্যবসা ইত্যাদি সব কিছুই মুসলমানের জন্য হারাম হবে। এ গুলো ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে না।

>> পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলাকে বিশ্বাস ও ভয় করে ইসলামের হারাম কাজগুলো ছেড়ে জীবন-যাপন করার মধ্যেই নির্ভর করে দুনিয়ার সুখ, শান্তি ও উন্নতি। আল্লাহ বলেন, ‘এলাকার লোকেরা যদি আল্লাহকে বিশ্বাস করে এবং ভয় করে চলে, আমি তাদের জন্য আসমান জমিনের বরকতের সব দরজা খুলে দেব।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হারাম কাজ তথা কুরআন সুন্নাহ’র নিষিদ্ধ কাজসমূহ ছেড়ে দেয়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ ও রাসুলের ভালোবাসা লাভে কুরআন সুন্নাহর যথাযথ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button