ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

ঝিনাইদহে এনজিও এবং মহাজনি সুদে জর্জরিত মানুষ

মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহে মধ্যম শ্রেনীর অধিকাংশ লোকজন এনজিও এবং মহাজনি সুদে জর্জিত হয়ে পড়েছে। অনেকে পাওনা দারের দেনা পরিশোধ করতে লোক লজ্জার ভয়ে গোপনে এনজিও, পরে মহাজনি সুদে জড়িয়ে পড়ে ভিটে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আবার মাঝে মধ্যে মহাজনি সুদ ও এনজিও কিস্তির টাকা দিতে না পেরে আতœহত্যার খবর পাওয়া যাচ্ছে। গ্রামবাসিও ভুক্তভোগি কয়েকটি পরিবারের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

গ্রামবাসি জানান, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মীর্জাপুর গ্রামের নাসের বেকারত্ব ঘোচাতে স্থানীয় বেসরকারি ক্রেডিড প্রোগ্রামের মাধ্যমে লোননেন। টাকা দিয়ে গোয়াল ঘর, গরু কিনেন। কিন্তু পরের মাসের শুরুতেই আসে, কিস্তির তাগাদা। যে টাকা দিয়ে গরু কেনাই শেষ করতে পারেনি। শুরু হয় কিস্তির গোনাদিন। এক পর্যায়ে গ্রামের মহাজনদের নিকট থেকে সুদের টাকায় কিস্তি দেয়। শুরু একদিকে এনজিও ঋণের কিস্তি, অন্যদিকে গ্রাম্য মহাজনদের সুদের টাকার যন্ত্রনা। বাধ্য হয়ে গরু বিক্রি করে অতিগোপনে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছে।

কুবিরখালি গ্রামের উজ¦ল হোসেন একই ভাবে এনজিওর টাকা, মহাজনি সুদের টাকা নিয়ে পরিশোধ করতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে গেছে।

বাজার গোপালপুরের হেলাল উদ্দিন জানান, তিনি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে হেলাল কম্পিউটার নামের দোকান করে ছিলেন। সেখানে প্রতি মাসে কিস্তির গোনাদিন। এক পর্যায়ে লোকলজ্জায় বিভিন্ন ঋণে জড়িয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যাই। ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানের কাজ করতাম আর প্রতি মাসে কিস্তি দিতাম। মাঝে সমস্যায় কিস্তি দিতে পারেনি। বাড়িতে ফিরে একসাথে টাকা দেয়ার জন্য চেষ্টা করি। কিন্তু ঐই এনজিওর নাকি গ্রাহকের নিকট থেকে একসাথে টাকা নেয়ার নিয়ম নেই। পরে এনজিও মামলা করেছে। যা কোর্টে চলমান। তিনি আরো জানান, শুধু নয় একই সাথে আরো ১১জন এনজিওর টাকা নিয়ে মামলায় হাজিরা দিচ্ছেন।

অন্যদিকে, আটলিয়া বাজারে নাইম থ্রিপিচ হাউজ নামের দোকানের মালিক এনজিও এবং মহাজনি সুদের টাকা দিতে না পেরে দোকান বন্ধ করে প্রায় ৫ (পাঁচ) মাস পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

এছাড়া উপজেলার বিষয়খালি বাজারে এনামুল হক লিখন, প্রদ্বীপ দুই সার কীটনাশক ব্যবসায়ি এনজিও এবং মহাজনি সুদের ঋণে জর্জিত হয়ে গোপনে লিখন লিবিয়াই এবং প্রদ্বীপ ভারতে চলে গেছে। এছাড়া বাজারের একাধিক সুদের টাকায় জর্জিত হয়ে ব্যবসায় ভাটা পড়েছে বলে জানা গেছে।

এছাড়া জেলার কালিগজ্ঞের থানা রোডে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় এনজিও এবং মহাজনি সুদের যন্ত্রনা রয়েছে বলে নিহতের ছেলে ভাস্যমতে জানা গেছে।##

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button