শিশুর নাম যে কারণে সুন্দর ও অর্থবহ হওয়া জরুরি
![](https://i0.wp.com/jhc24.com/wp-content/uploads/2019/03/Jibon-Top20160227105059-3.jpg?resize=750%2C390&ssl=1)
ঝিনাইদহের চোখঃ
শিশুর জন্মের পর তার জন্য একটি সুন্দর ইসলামি নাম রাখা প্রত্যেক মুসলিম পিতা-মাতার জন্য আবশ্যক কর্তব্য। জন্মের সপ্তম দিনে শিশুর সুন্দর শ্রুতিমধুর ও অর্থবহ নাম রাখা এবং আকিকা করা জরুরি।
হাদিসে পাকে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সুন্দরকে ভালোবাসেন। (মুসলিম)
তাই শিশুর সুন্দর এবং অর্থবহ ইসলামি নাম রাখলে মহান আল্লাহ নিজেই খুশী হবেন। আর এ ব্যাপারে রয়েছে হাদিসে সুস্পষ্ট নির্দেশনা। কেননা কেয়ামদের দিন প্রতিটি মানুষকেই তাদের দুনিয়ায় রাখা নির্ধারিত নামেই ডাকা হবে। হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-
হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের নামে এবং তোমাদের পিতার নামে। অতএব, তোমরা নামগুলো সুন্দর করে রাখ। (আবু দাউদ ও বায়হাকি)
অন্য হাদিসে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যার সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে, সে যেন তার (সন্তানের) সুন্দর নাম রাখে এবং তাকে উত্তম আদব কায়দা শিক্ষা দেয়।’
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে ঘোষণা অনুযায়ী প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানের জন্য করণীয় হলো শিশু সন্তানের সুন্দর এবং অর্থবহ নাম রাখা।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় মহিমান্বিত ও সম্মানিত আল্লাহর কাছে তোমাদের নামগুলোর মধ্যে প্রিয়তম হলো ‘আবদুল্লাহ’ ও ‘আবদুর রহমান’। (মুসলিম)
সুন্দর এবং অর্থবহ নাম রাখা বা না রাখায় রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে কাছে যখন কোনো লোক আসতেন; তিনি তাদের নাম জিজ্ঞাসা করতেন। নাম যদি সুন্দর এবং অর্থবহ হতো তিনি খুব খুশি হতেন। আর যদি অর্থবহ এবং সুন্দর না হতো তিনি তা পরিবর্তন করে দিতেন। এ ব্যাপারে একটি হাদিসে একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। আর তাহলো-
হজরত সাঈদ ইবন মুসাইয়্যাব রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর দাদা হাযন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গেলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার নাম কি? তিনি বললেন আমার নাম হাযন (শক্ত)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘না’, বরং আপনার নাম হওয়া উচিত ছিল ‘সাহল’ (সহজ, সরল)।
তিনি (হাযন) উত্তরে বললেন, আমার পিতা যে নাম রেখেছেন তা আমি পরিবর্তন করব না। সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব বলেন, এরপর আমাদের পরিবারে পরবর্তীকালে কঠিন অবস্থা ও পেরেশানি লেগেই থাকত। (বুখারি, মিশকাত)
এ নামের প্রভাব যেমন দুনিয়াতে বিরূপ হয়; পরকালেও দুনিয়ায় রাখা নামে তাকে ডাকা হবে। সুতরাং চিন্তা-ভাবনা করেই সুন্দর এবং অর্থবহ নাম রাখা জরুরি।
পরিশেষে…
শিশুর নাম হবে সুন্দর, অর্থবহ, সহজ এবং ছোট। যাতে নাম সম্বোধন করে ডাকতে কষ্ট না হয়। এমন দীর্ঘ ও কঠিন নাম না রাখাই ভালো; যে নাম ডাকতে কষ্ট হয় এবং নামের কুপ্রভাব সন্তানের মাঝে বিরাজ করে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব শিশুর সুন্দর, সহজ, ছোট এবং অর্থবহ নাম রাখার তাওফিক দান করুন। পরকালের কঠিন সময়ে কেয়ামতের ময়দানে বান্দাকে সুন্দর নামে ডাকার মাধ্যমে সুন্দর ও কল্যাণময় ফয়সালা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।