ধর্ম ও জীবন

আল্লাহ মানুষকে যেভাবে পরীক্ষা করবেন

ঝিনাইদহের চোখঃ

মানুষের ওপর বিভিন্ন সময় বিপদাপদ ও বালামুসিবত আপতিত হয়। তবে সব বালা-মুসিবতই আজাব ও শাস্তিস্বরূপ নয়; বরং তা বান্দার ঈমানি পরীক্ষা ও ধৈর্য যাচাই করার অন্যতম মাধ্যম। ধৈর্যশীল বান্দা হিসেবে আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করা সহজ কথা নয়। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা অত্র আয়াত দ্বারা বান্দাকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, বিপদ-মুসিবত শুধু আজাবই নয় বরং তা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পরীক্ষা বা মাধ্যমও বটে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা, ধন-সম্পদের ক্ষতি ও প্রাণহানি এবং ফল-ফসলের ক্ষতি দ্বারা পরীক্ষা করব। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৫৫)

পূর্ববর্তী আয়াতে আল্লাহ তাআলা শহিদদের ব্যাপারে বলেছেন, যাঁরা ধৈর্যের চরম উৎকর্ষ দেখাতে পেরেছেন, তারাই সফলকাম হয়েছে। তারাই সম্মানের অধিকারী।

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করার ঘোষণা দিয়েছেন। সুতরাং তাঁর নৈকট্য অর্জনকারীদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। বান্দাকে পরীক্ষা করার লক্ষ্য হলো ফলাফল দুনিয়ার মানুষের সামনে প্রকাশ করে দেয়া।

বান্দাকে সব সময় কঠিন বিষয়ে পরীক্ষা করা হবে, বিষয়টি এমন নয় বরং সামান্য বিষয় নিয়েও পরীক্ষা হতে পারে। যেমন- প্রয়োজন দেখা দেয়া সত্ত্বেও হারাম ও অবৈধ সম্পদ থেকে আত্মরক্ষা করা; রোজা পালনসহ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের সময় অস্থির ও ভয় না পাওয়া।

তাছাড়া সম্পদে সুদ-ঘুষ, আত্মসাৎ, অবৈধ বেচা-কেনা এবং সম্পদ অর্জনের শরিয়াত পরিপন্থী যে কোনো উপায় বর্জন করা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সম্পদের ক্ষতি সাধিত হলে, মালামাল ‍চুরি হয়ে গেলে কিংবা আগুনে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেলে সর্বক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ করা। রোগ-ব্যাধিতে, আঘাত-প্রতিঘাতে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ধৈর্যশীলতার পরিচয় দেয়া। এ সবই আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য পরীক্ষা।

পরিশেষে…
আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে মানুষের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। এ পরীক্ষা ধন-সম্পদের ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে হতে পারে, ক্ষুধা-তৃষ্ণার কষ্টের মাধ্যমেও হতে পারে। এমনকি এ পরীক্ষা প্রাণের বিনিময়েও হতে পারে।

এ সকল কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার একমাত্র উপায় হলো সবর তথা ধৈর্য অবলমবন করা আর আল্লাহ তাআলার বিধান মোতাবেক তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর সন্তুষ্ট থাকা। তবেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সকল বিপদ ও মুসিবতে কুরআনের বিধান মেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার মাধ্যমে মাওলার নৈকট্য অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button