ঝিনাইদহে গাজী কালু চম্পাবতীর ওরস অনুষ্ঠিত
টিপু সুলতান, ঝিনাইদহের চোখঃ
লাখো লাখো আষেকান ভক্ত মুরদীদের উপস্থিতিতে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে ঐতিহাসিক গাজী, কালু ও চম্পাবতীর মাজারে বৃহস্পতিবার ওরস অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের শেষ বৃহস্পতিবার ১ দিনব্যাপী এ ওরস অনুষ্টিত হয়। কিন্তু ওরসের ৪/৫ দিন আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গাজী, কালু, চম্পাবতীর ভক্ত ও বিভিন্ন আশেকানরা মাজার এলাকায় এসে জড়ো হতে থাকে। প্রায় ৪০ বিঘা জমি জুড়ে মানুষের উপচে পড়া ভীড় ,ভক্তদের জিকির ,নাচ গান,হিজড়াদের নাচ গান চলে সারারাত। ওরসের দিন সকাল থেকে রাত যতই বাড়তে থাকে দুর দুরান্ত থেকে নারী, পুরুষ শিশু ,কিশোর বৃদ্ধ সহ বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীদের আগমনে ততই ভীড় বাড়তে থাকে। এ সময় প্রায় লাখো মানুষের উপচে পড়া ভীড়ে কোথাও পা রাখার ঠাই ছিল না ।
ইতিহাসে জানা যায়,বৈরাট নগরের শাহ সেকেন্দারের পুত্র গাজী। কালুকে তারা এক নদীপাড়ে কুড়িয়ে পেয়ে লালন পালন করে। সংসার বৈরাগী গাজী কালুকে সাথে নিয়ে প্রায় ৭ বছর সুন্দরবনে নিরুর্দ্দেশ থাকার পর ফিরে আসেন বাদুরগাছা গ্রামে। এ এলাকার শ্রীরাম রাজার দরবারে আসলে তাদের কে ফকির ভেবে তাড়িয়ে দিলে পাশের জঞ্জলে আশ্রয় নেয়। এরপর দৈবক্রমে রাজপ্রাসাদে আগুন লাগে ও রানী অপহৃত হলে জোতিষিরা রাজাকে গাজী কালুর স্বরনাপন্ন হতে বলে। তখন শ্রীরাম রাজা গাজী কালুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে গাজী একমুষ্টি ধুলা পড়ে প্রাসাদের দিকে ছুড়ে মারলে আগুন নিভে যায় এবং অপহৃত রানী উদ্ধার হয়। রাজা তখন ইসলাম ধর্মে দিক্ষা নিয়ে তাদের কে প্রাসাদে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুদিন পর এক বাম্্রন রাজা মুকুট রায়ের সাথে গাজীর যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে রাজা পরিষদ সহ আতœহত্যা করে। কেবল রাজকন্যা চম্পাবতি ও তার ভাই জীবিত ছিলেন। এর পর গাজী চম্পাবতীকে বিয়ে করে। সর্বশেষ বারবাজারের বাদুরগাছা গ্রামেই তাদের জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং এখানেই তাদের মাজার গড়ে উঠে। তাদের স্মরণে দুর দুরান্তের ভক্তবৃন্দরা প্রতিবছরই জাঁকজকম পূর্ণ ভাবে ওরস পালন হয়ে থাকে।
শুক্রবার সকাল থেকে দরদুরান্তের ভক্ত বৃন্দের লোকজন নিজেদের গন্তব্যস্থলে ফিরতে শুরু করে। অনেকে বলছে তারা ৭ দিন বাবার দরবারে অবস্থান করে বাড়িতে ফিরবে।