ঝিনাইদহের হরিজনরা নানা সমস্যায় জর্জরিত
মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহ পৌরসভার হরিজন সম্প্রদায় (সুইপার কলোনী) লোকজনের সামাজিক মর্যাদার পরিবর্তন আসলেও জীবনযাত্রার মানের কোন পরিবর্তন আসেনি। আবাসন সমস্যাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলা শহরের চাকলাপাড়ায় দেশ স্বাধীনের পর হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাসের জন্য ঘর নির্মান করা হয়। সে সময় ৩৬টি পরিবার বসবাসের জন্য ঘর তৈরি করা হয়। সময়ের পরিবর্তে সম্প্রদায়ের লোকজন বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি ঘরসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। বর্তমানে ৩৬টি পরিবারের লোকজন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঠাসাঠাসি করে ১৭০ থেকে ১৭৫ জন সদস্য নিয়ে বসবাস করছেন।
আবাসনে বসবাসকারি গৌতম সাহা বলেন, ছোট থেকেই এখানে বাবা মায়ের সাথে বসবাস করে আসছি। আমাদেরে কান জায়গা জমি নেই। সমাজের নি¤œমানের কাজকর্ম আমরাই করে থাকি। এখানে কাজের তুলনায় লোক সংখ্যা বেশি। ভোর হলেই শহর পরিষ্কারসহ কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়তে হয়। সকলেই তো আর পৌরসভার চাকুরি পাই না। এখানে কাজের তুলনায় লোকসংখ্যা অনেক বেশি। আবার যে বেতন পাই তা দিয়ে সংসারের লোকজন নিয়ে কষ্টের মধ্যেই দিন চলে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমার পরিবারে মা ও বড় ভাই পৌরসভায় চাকুরি করেন। পরিবারের সদস সংখ্যা ৯ জন। কিন্তু ঘর রয়েছে মাত্র দুইটি। দুইটি ঘরেই ৯ জন সদস্য কষ্টেই বসবাস করছি।
বসবাসকারি খোকন সাহা বলেন, এতগুলো লোকজনের পানি ব্যবস্থার জন্য দুইটি টিউবওয়েল, আর দুইটি শহরের স্বাবলাই পানির ব্যবস্থা রয়েছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থায় রয়েছে ১০টি মাত্র বাথরুম। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। আবার দীর্ঘ দিন সংস্কার না করায় ব্যবহারের অনুপযোগি হয়েয়ে পড়েছে। দরজা ভেঙে গেছে, দেওয়ালের সিমেন্ট বালু খসে পড়ছে। বসবাস ও রান্না ঘরের ছাউনি ছিদ্র হয়ে পানি পড়ে। বর্ষার সময় পানি আসলে রান্না ঘরে রান্না করা সম্ভব হয়না। যা এক কথায় ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। সংস্কার করার একান্ত প্রয়োজন।
আবাসনের সর্দ্দার চিত্তরজ্ঞন সাহা বলেন, আমরা নি¤œ শ্রেনী বিবেচনায় কোন লোকজনের সাথে কথা , এমনকি তারা আমাদের সাথে কথা বলতো না। এখন আমরা কথা এবং স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারি। আমাদের ছেলে মেয়ে আগে স্কুলে পড়তে পারতো না। এখন ছেলে মেয়েরা স্কুলে যাই। সব কিছু মিলে আমাদের সামাজিক ভাবে পরিবর্তন আসলেও জীবণযাত্রা মানের তেমন পরিবর্তন আসেনি।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌর সভার মেয়র সাইদুর কুরিম মিন্টু বলেন, তাদের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। একার পক্ষে এমন একটা বড় কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সকলে সম্মিলিত ভাবে এগিয়ে আসলেই কাজটি সহজ হবে বলে তিনি মনে করেন।##