কুকুরে কামড়ালে কী করবেন?
ঝিনাইদহের চোখঃ
কেউ কুকুর ভালোবেসে বাড়িতেই পোষেন, কেউবা কুকুর থেকে একশ’ হাত দূরে থাকেন। কুকুরের প্রতি ভালোবাসা কিংবা ভয়, যেটিই থাক না কেন, এর কামড় কিন্তু ভয়েরই কারণ। তাই কুকুরের কামড়ের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে ও কামড়ানোর পরেও বিষ নষ্ট করতে কিছু পদক্ষেপ করতেই হয়।
জলাতঙ্ক রোগের ভয় ছাড়াও এই কামড়ে যে প্রদাহ তৈরি হয়, তাতে অন্য সংক্রমণও খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে। তাই বাড়তি সতর্কতা নিতেই হয়। এছাড়া কুকুরের কামড় খুব যন্ত্রণাদায়কও।
সময় মতো চিকিৎসা না হলে কিন্তু জলাতঙ্ক যেমন প্রাণ কেড়ে নিতে পারে, তেমনই প্রদাহের জায়গায় সংক্রমণ ছড়িয়ে সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। কুকুরে কামড়ালে কেবল র্যাবিস ভাইরাসের ইঞ্জেকশন নিলেই কিন্তু দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। রয়েছে আরও কিছু করণীয়-
কুকুরে কামড়ালে প্রথমেই ক্ষতস্থান চেপে ধরুন। রক্ত যত তাড়াতাড়ি বন্ধ করা যাবে, ততই ভালো। তবে রক্ত বন্ধ করতে কোনোরকম কেমিক্যাল যোগ করবেন না প্রথমে।
ক্ষতস্থান পরিষ্কার করতে কোনোরকম সুগন্ধি সাবান ব্যবহার চলবে না। পারলে পরিষ্কার কোনো কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করুন, একান্তই তা হাতের কাছে না থাকলে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক লোশন দিয়ে পরিষ্কার করুন। এই সময় ক্ষতস্থান বেশি ঘষবেন না। যতটুকু না করলে বিষ যায় না। ততটুকুই ঘষুন।
এবার অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল কোনো লোশন বা অ্যান্টিবায়োটিক অয়েনমেন্ট লাগিয়ে পরিষ্কার গজ কাপড় দিয়ে বেঁধে দিন জায়গাটা।
এরপরই শুরু আসল চিকিৎসা। কোনোভাবেই দেরি করা যাবে না। দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে যান। র্যাবিস ভাইরাসের হানা ঠেকাতে দরকারি ইঞ্জেকশনের পাশাপাশি টিটেনাস ইঞ্জেকশনও নিতে হতে পারে। কুকুরে কামড়ানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই দুটি ইঞ্জেকশনই নিয়ে ফেলতে হবে। র্যাবিসের একটি নির্দিষ্ট কোর্স আছে। তার প্রথমটি যেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নেওয়া হয়ে যায়। এবার কোর্স অনুযায়ী নিয়ম মেনে নিতে হবে ইঞ্জেকশন।
প্রয়োজনীয় ওষুধ ও পথ্যের পাশাপাশি অবশ্যই প্রতি দিন কামড়ের ক্ষতস্থান পরিষ্কার করতে হবে। ধুলোবালি লাগানো যাবে না ওখানে। যতদিন না প্রদাহ শুকিয়ে আসে, ততদিন এই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
খেয়াল রাখুন কুকুরটির দিকেও। কামড়ানোর কয়েকদিনের মধ্যেই কোনো অসুখে মারা গেলে বাড়তি সচেতনতা দরকার হয়। তেমন হলে সেই তথ্য অবশ্যই জানান আপনার চিকিৎসককে।