ঝিনাইদহের পুটি বালার কথা কেউ মনে রাখেনি

মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহের পুটি বালা। স্বামী মারা গেছে প্রায় ২৫ বছর আগে। সেই থেকে সংসারের একমাত্র হালধরার লোকটাকে হারিয়েছেন তিনি। নিজের কোন জায়গা জমি নেই। বৈবাহিক জীবনে চেগি দাসী নামের এক মেয়ে রয়েছে। মেয়েকে জেলার কালিগজ্ঞ উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের জগেন দাস নামের এক নির্মান শ্রমিকের সাখে বিয়ে দিয়েছেন। তার সংসারেও রয়েছে তিন সন্তন।
তারপরও জামায়ের সংসারে তিনি বাড়তি ঝামেলা। বাধ্য হয়েই পরের নিকট হাত পেতে ভিক্ষাবৃত্তি করে, যে টাকা পাই তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলে। কিন্ত্র বয়স এখন ৭৭ বছর। বয়সের ভারে নূয়ে পড়েছেন তিনি। ঠিকমত চলাফেরাও করতে পারেন না। দেখা ভালের মত কেউ নেই। দীর্ঘ ২৫ বছর আগে স্বামী মারা গেলেও তার ভাগ্যে জোটেনি বিধাব কিংবা বয়স্ক ভাতা’র কার্ড।
পুটিবালা জানান, এক সময় সুখের সংসার ছিলো। অভাব অনটন কি?, তা অনুভব হয়নি। আজ বাধ্য হয়েই মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে অতিকষ্টে সংসার চালছে। জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ১নং সুন্দরপুর-দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ছোট ভাটপাড়া গ্রামের তার ভাই জিতেন দাসের ছোট্ট একটি কুড়ে ঘরে বসবাস করেন। তার আকুতি সরকার বয়স্ক, বিধরা এবং অসহায় মানুষের সরকার কার্ড দেন। আমার ভাগ্যে তাও জটেনি। আর কত বয়স হলে বয়স্ক / বিধবা ভাতা কার্ড পাবো জানিনা। জনপ্রতিনিধিদেও নিকট গেলে তারা কথা দেয়। কিন্তু কেউ কথা রাখেনী।
পুটি বালার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সরলা জানান, একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য কতবার জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে। সাবেক মেম্বর জয়নাল ও রবিউল একটি বিধবা ভাতা কার্ড করে দেবে বলে অনেক ঘুরিয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। বর্তমান কাদের মেম্বর দু‘বার ভোটের আইডি কার্ডের ফটোকপি ও ছবি নিয়েছে। কিস্তু এখনও কার্ড জোটেনি কার্ড। ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ও ছবি নাকি কাদের মেম্বার হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানান।
তবে পুটি বালা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, প্রায়ই না খেয়ে থাকতে হয় তাদের। তার ভাই বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করেন। তা বাজারে বিক্রি করে তিন সন্তানের সংসারই ঠিক মতো চলে না। তার উপর আবার আমি (পুটি বালা) বাড়তি বোঝা হয়ে আছে। কোন উপায় না পেয়ে এখন ভিক্ষা ছাড়া কোন উপায় নেই। তিনি আরো বলেন, ভাই জিতেনের মাজার হাড় খাওয়া রোগ আছে। চিকিৎসার খরচও জুটছে না।
এ বিষয়ে ওয়ার্ডের মেম্বর আব্দুল কাদের বলেন, আমি তাদের ১০ টাকা কেজি চাউলের আওতায় এনে দিয়েছি। পরবর্তীতে পুটি বালার বয়স্ক, অথবা বিধবা ভাতা একটি কার্ডেও ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াস রহমান মিঠু বলেন, আগামিতে পুটি বালাকে বয়স্ক অথবা বিধবা ভাতা’র একটি কার্ড করে দেওয়া বলে তিনি আশ্বাস দেন।