নুসরাতের খাতায় অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়নের বর্ণনা
ঝিনাইদহের চোখঃ
২৬ মার্চ মাদ্রাসা শিক্ষক সিরাজ উদ-দৌলার কাছে কীভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন, তা নিজের খাতার দুই পাতায় লিখে গেছেন মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।
শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা করার পর শিক্ষকের আক্রোশের আগুনে জ্বলতে হয়েছে প্রতিবাদী এই তরুণীকে। টানা চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাতে নুসরাত মৃত্যুবরণ করেন। তবে এর আগেই ফেনীতে তাঁর বাড়িতে ওই খাতাটি পায় পুলিশ।
খাতার দুই পৃষ্ঠায় নুসরাত তার সহপাঠীদের উদ্দেশে অনেক কিছু লিখে গেছেন। অধ্যক্ষের মুক্তির পক্ষে তাঁর যেসকল সহপাঠী দাঁড়িয়েছিলেন, তাদেরকেও সমালোচনা করে লিখে গেছেন এই ছাত্রী।
সহপাঠীদের উদ্দেশে নুসরাত লিখেছেন, ‘তোরা সিরাজুদ্দৌলা সম্পর্কে সব কিছু জানার পরেও কিভাবে তার মুক্তি চাইতেছিস? তোরা কি জানিস না ঐদিন ক্লাসে কি হইছে, উনি আমার কোন জায়গায় হাত দিয়েছে এবং আর কোন জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করছে?
‘উনি আমাকে বলেছে, নুসরাত ঢং করিও না। তুই প্রেম করিস না, ছেলেদের সাথে প্রেম করতে ভাল লাগে? ওরা তোরে কি দিতে পারবে, আমি তোকে পরীক্ষার সময় প্রশ্ন দেব।’
গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম (এইচএসসি) পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান ওই ছাত্রী। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। ওই সময় বোরকা পরিহিত ৪-৫ জন ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত কক্ষ থেকে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে কয়েকজন বোরকা পড়া নারী পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার চেষ্টা করে।