অশান্ত পৃথিবী,শান্তির আহবান !—মোহাম্মদ সবুর মিয়া
ঝিনাইদহের চোখঃ
পৃথিবী ক্রমেই অশান্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই তথ্যপ্রযুক্তির উদ্ভাবন, মানুষের কল্যাণ ঘটাবে এটাই আবশ্যক। বাস্তবতা দেখছি ভিন্ন, যে ডিভাইস গুলো মানুষের কল্যাণে উদ্ভাবন করা হয়েছিল, সেগুলোই আমাদেরকে অশান্তির দিকে, হানাহানির দিকে, উগ্রতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর যে দেশগুলোকে শান্তিবাদী দেশ বলা হয়; আমরা মনে করি পৃথিবীতে মানুষের নিরাপদ আশ্রয়, যে সকল দেশগুলোকে বিবেচনা করা হয়। সেই দেশগুলো আজ প্রশ্নের সম্মুখীন ?
গত কিছুদিন পূর্বে নিউজিল্যান্ডের মত শান্তিময় দেশে ঘটে গেল কি বর্বরতা। প্রাণ গেল অসংখ্য মানুষের। আহত মানুষের সংখ্যাও অনেক। আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া সহ সকল দেশ ও মহাদেশ মনে হচ্ছে, মানুষের জন্য নিরাপত্তা বলাই আর নেই। মানব কল্যাণে ব্যবহৃত প্রযুক্তি দিয়ে মানুষের উপর চালানো হচ্ছে বর্বরতা। সেখানে রেহাই পাচ্ছে না শিশু, বৃদ্ধ,নারী, এমনকি পশু পাখিও। প্রত্যেকটি বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতার পেছনে আছে মানুষ। একটা বর্বর হামলা হলেই আমরা বলি জঙ্গি,গোষ্ঠী জঙ্গি, গোষ্ঠী বলতে একশ্রেণীর মিডিয়া গোষ্ঠী মুসলিমদের ইঙ্গিত করে থাকে। বিভিন্ন মিডিয়া বুঝিয়ে থাকে, জঙ্গি মানেই মুসলিম, দাড়ি টুপি,জুব্বা ধারী। এটাও এক ধরনের ইসলাম বিদ্বেষী ষড়যন্ত্র। ইসলামকে ম্যানুপুলেট ও বিশ্বের কাছে বিতর্কিতভাবে উপস্থাপন করার এক অপকৌশল।
মুসলিমরা অর্থাৎ কোরআন ও সুন্নতের অনুসরণকারী, কখনো জঙ্গিবাদ, হঠকারী, চরমপন্থী, মানুষ হত্যাকারী হতে পারে না। কারণ ইসলাম তো শান্তির ও মানব কল্যাণের ধর্ম। কোন মানুষ ইসলামে একটি নিদর্শন দেখাতে পারবে না যেটি, পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির উপকরণ। মুসলমানদেরকে জঙ্গি বানানো পশ্চিমা মিডিয়া ও তাদের রাজনৈতিক কূটকৌশলের প্রতিচ্ছবি। কিছু নামধারী ও লেবাসধারী মুসলমানদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।
পৃথিবীর কোন ধর্ম-বর্ন, জাতি- গোষ্ঠী সাধারণ মানুষ, কখনো অশান্তি অপ তৎপরতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পছন্দ সমর্থন করে না। প্রশ্ন, তাহলে কেন পৃথিবী অশান্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে? উত্তর! স্পষ্ট রাজনীতির গুটি রাজনৈতিক হিংস্র থাবা, নেতিবাচক মনোভাব। অন্যকে রাজনৈতিক অপকৌশল হিসেবে নিয়ন্ত্রণ করা। নিজেদের অস্ত্র ব্যবসা কে প্রসারিত করা। সর্বোপরি নিজের কর্তৃত্ব অন্য জাতি বা গোষ্ঠীর উপরে প্রয়োগ করা।
গত রবিবার শ্রীলঙ্কায় হামলা হলো ধর্মীয় উপসনালয়ে, প্রাণ গেল অসংখ্য মানুষের যার মধ্যে বাংলাদেশি আছে। আহতের সংখ্যা পাঁচশত এর কাছাকাছি। কে নিবে এই দায়ভার সত্য ঘটনা কি উন্মোচিত হবে নাকি রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিবে। এত প্রাণ বিনষ্ট হচ্ছে, পরিবার ও পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সদস্য। কখনো এমনও দেখা যাচ্ছে, পরিবারের কেউ জীবিত নেই। বর্তমানে মানব জাতিকে বিনাশ করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি । তাহলে কি আমরা প্রযুক্তি কে দোষারোপ করব! না কি বলবো? প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পেছনে একটি অপশক্তি আছে! কুৎসিত মনের মানুষ রুপি শয়তানি অপশক্তি, মানুষ হত্যাকারী। তাদেরকে দোষারোপ করব। দোষারোপের শেষ কোথায়? বর্বর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হবে,আলোচনা হবে, শোক প্রস্তাব জ্ঞাপন করা হবে, অপরাধীকে বিচারের মুখোমুখির প্রত্যয়় ব্যক্ত করা হবে । ফলাফল শূন্য ।
পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য,রাজনীতিবিদদের ইতিবাচকভাবে সত্যি কারের মানব কল্যাণে, সত্যি কারের শান্তির জন্য এগিয়ে আসতে হবে। রাজনীতি হতে হবে শুধুই মানব কল্যাণে।
আমরা আহ্বান জানাই আসুন, আপনাদের নেতৃত্বে বিশ্ব মানব কল্যাণে পরিচালিত হোক। এটাই হচ্ছে মানবজাতির প্রত্যাশা,সেই প্রত্যাশা বাস্তবে রূপ দেয়ার মহান দায়িত্ব বর্তমান বিশ্ব রাজনীতিবিদদের।
মোহাম্মদ সবুর মিয়া ।
E-mail: sabur2050gmail.com