অন্যান্য

ভালোবাসা কি গাছে ধরে?

ঝিনাইদহের চোখ ডেস্কঃ

আমরা প্রতিনিয়ত এই যে ভালোবাসার কথা বলি, সেই ভালোবাসা আসলে কি? অনেকে আবার এই ভালোবাসা নিয়ে আক্ষেপ করে বলে ” ভালোবাসা কি গাছে ধরে?” ভালোবাসার সহস্র দোলাচলে এমন প্রশ্ন আপনার মনে তৈরি হতেই পারে। আর এর উত্তর সবাই একদিন না একদিন খোঁজে। ভালোবাসা হচ্ছে মানবিক অনুভূতি এবং আবেগকেন্দ্রিক একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ কোনো মানুষের জন্য স্নেহের শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ভালোবাসা।তবে ভালোবাসা অনেকসময় আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যেতে বসে।অনেকে ভালোবেসে বিয়ে করে আবার অনেকের বিয়ের আগেই ভালোবাসা ভেঙ্গে যায়। কথায় আছে বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই নাকি ফিকে হয়ে যায় ভালোবাসা। তাই বলে ভালোবাসা প্রকাশ বন্ধ করে দেবেন না। দুজন মানুষের মাঝে সম্পর্ক বা ভালোবাসা গাছের মতই তারও প্রতিনিয়ত যত্ন দরকার; মনে রাখবেন ভালোবাসাই হতে পারে আজীবন সম্পর্ক ধরে রাখার চাবিকাঠি। নিজের কাছের মানুষকে কখনোই কেউ হারাতে চায় না। তবুও ছোট ছোট কিছু ভুলে হারিয়ে যায় ভালোবাসা। তখন দাম্পত্যজীবনে একঘেয়েমি চলে আসে। তাই জেনে নিন দাম্পত্যজীবনের গাছে ভালোবাসা ধরাতে হলে কি কি যত্ন করতে হবে।

ভালোবাসার স্পর্শ : ভালোবাসা গাছের মতো, যত যত্ন করা যাবে ততই বাড়বে। ভালোবাসার স্পর্শে ডালপালা মেলে ফলে-ফুলে ভরে যায়, আর অযত্নে যায় শুকিয়ে। অনেক দম্পতি মনে করেন, ‘ভালোই তো আছি, আবার ভালোবাসা দেখাতে হবে কেন? অথচ ভালোবাসা দেখালে দাম্পত্যজীবন হতে পারে মধুময়। ঠিক গাছের মতোই যত্ন নিন। হঠাৎ করেই ফুল বা ছোটখাটো উপহার দিয়ে আপনার প্রিয়া বা প্রিয়তমকে দিন চমকে।

মিলেমিশে কাজ করা : মিলেমিশে কাজ করলে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই একধরনের ভালো লাগা তৈরি হয়। এতে দুজনের বোঝাপড়াও ভালো থাকে। প্রায়ই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনে একসঙ্গে বাইরে থেকে ফিরলেন। কিন্তু খাবার তৈরি বা সংসারের অন্য কাজে লেগে গেলেন স্ত্রী। আর স্বামী টিভি চালিয়ে বসলেন সোফায়। এমনটা না করে বরং সংসারের কাজকর্ম দু’জনে মিলেমিশে শেষ করে, পরে একসঙ্গে দু’জন মিলে টিভি দেখুন বা গল্প করুন। সারাদিন কে কী করলেন একে অপরকে জানান।

প্রশংসা : অনেকদিন একসঙ্গে থাকার ফলে সব কিছুই কেমন যেন সাধারণ ব্যাপার হয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন, নতুন পোশাক বা হেয়ারস্টাইলে আপনার সঙ্গীকে সুন্দর লাগছে এ কথা বলতে একদম সংকোচ করবেন না। আসলে এমন ছোটখাটো প্রশংসার ‘এফেক্ট’ কিন্তু অনেক বড় হয়। অর্থাৎ ‘প্রশংসা ছোট, তবে তার এফেক্ট বড়’।

স্বীকৃতি : সব মানুষই মাঝে মাঝে তার কাজের স্বীকৃতি চায়, এমনকি সংসারের কাজের ক্ষেত্রেও। তাই মাঝে মধ্যে একে অপরকে সে কথা জানান। আরো রোমান্টিক হয়, যদি কথাটা জানানো যায় ছোট্ট একটি ‘নোট’ লিখে অথবা এসএমএস-এর মাধ্যমে। দেখবেন পরের দিন কাজের আগ্রহ তো বাড়বেই, তার সঙ্গে আপন মানুষটিকে মনে হবে আরো কাছের।

ত্রুটি বড় করে না দেখা : একসঙ্গে থাকতে গেলে অনেক সময় ছোটখাটো অভ্যাসগুলো অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একজন হয়তো সব সময় মোজা খুলে বিছানায় রেখে দেন। অপরজন টুথপেস্টের ঢাকনা লাগাতে যান ভুলে। অনেক পরিবারে এ সব ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অযথা ঝগড়া শুরু হয়। তাই এসব বিষয়গুলো এড়িয়ে চললে জীবন কিন্তু অনেক মধুর হতে পারে।

ভালোবাসার মানুষটির শখ : মাঝে মাঝে কখনো নিজেরা একসঙ্গে এমন কিছু করুন, যাতে অন্য ধরনের গল্প বা আলোচনা হতে পারে। একসঙ্গে সাইকেল চালাতে বা হাঁটতে যেতে পারেন। খোলা আকাশের নিচে প্রাণ খুলে হাসতে বা কথা বলতে পারেন। একে অপরের সঙ্গে সব কিছু ভাগাভাগি করার নামই যে বন্ধুত্ব, আর সেটাই তো দীর্ঘ ও সুখী দাম্পত্যের আসল কথা।

রাগ পুষে রাখতে নেই : রাগ, অভিমান ছাড়া কি দাম্পত্য জীবন মধুর হয়? রাগ, দুঃখ, অভিমান তো থাকবেই। কিন্তু তাই বলে রাগ যেন বেশিক্ষণ না থাকে। দিনের শেষে রাগ ভুলে অপরের কাছে এগিয়ে যান। রাগ বা মান ভাঙানোর উত্তম সময় সেটা। তা না হলে দু’জনকেই হয়তো না ঘুমিয়ে সারাটা রাত কাটাতে হবে যার প্রভাব পড়বে পরবর্তীতেও।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button