হাবিব ওসমান, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের দুটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ১০ টি গ্রাম ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ওই গ্রামগুলোর ওপর দিয়ে প্রচন্ড ঝড়োবাতাস বয়ে যায়। এতে কাঁচা ঘরবাড়ি, ক্ষেতের ফসল, গাছ ও বিদ্যুতের পোল উপড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে, বৃহস্পতিবার দুপুরে কোলা ও জামাল ইউনিয়নের ময়ধরপুর, খালকুলা, বিনোদপুর, কাবিলপুর, ডাউটি, উল্যা, বাগডাঙ্গা, খাঞ্জাপুর, জয়নগরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ির টিন উড়ে আছড়ে পড়ে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। ছোট বড় শত শত গাছ ও কমপক্ষে ৯ টি বিদুত্যের পোল উপড়ে পড়েছে। কৃষকদের উঠতি সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। সড়কের পাশের গাছের ডাল ভেঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগের তার ছিড়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ূব হোসেন জানান, গত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে আকাশে ঘন কালো মেঘ জমে প্রচন্ড বেগে ঝড়োবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় তার এলাকার বেশ কিছু গ্রামের বসতঘরের টিন উল্টে গেছে। অসংখ্য গাছ উপড়ে ভেঙ্গে পড়েছে।
জামাল ইউনিয়নের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ উল্যা গ্রামের বয়োবৃদ্ধ আলহাজ্ব লুৎফর রহমান জানান, অনেক দিন এমন ঝড় দেখেননি। প্রায় ২০ মিনিট ধরে বয়ে যাওয়া ঝড়ো দমকায় তার গ্রামের লিটন হোসেন, সলেমান মিয়া, নূর ইসলাম, দুদু মিয়া, শরিফুল ইসলামসহ কমপক্ষে ৩০ জনের ঘরের টিন উড়ে গেছে। এ সময় আব্দুল জব্বারের বসতঘরের ওপর একটি বড় মেহগনি গাছ উপড়ে পড়লে ঘরের টিন সম্পূর্ণটাই দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং পাশের গোয়াল ঘরের মধ্যে থাকা দুটি ছাগল ডালচাপায় মারা যায়। এ সময় আহত হয় তার ছেলে বাপ্পারাজ।
জয়নগর গ্রামের শিক্ষক অসিম বিশ্বাস জানান, ঝড়ে তাদের গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক নরেশ বিশ্বাস,নিত্য বিশ্বাস, পলাশ বিশ্বাস, খগেন বিশ্বাসসহ অনেকের ঘরের টিন উড়ে গেছে। তিনি বলেন, শুধু ঘরই নয় ক্ষেতের সবজি ছাড়াও গাছপালা উপড়ে ও ভেঙ্গে পড়ে কৃষকের সীমাহীন ক্ষতি হয়েছে।
ডাউটি গ্রামের মনিরুল ইসলামসহ গ্রামবাসী জানান, তাদের গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক হাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইলামসহ বেশ লোকের বসত ঘর গত রাতের ঝড়ে মাটির সাথে মিশে গেছে। তারা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
কালীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির ডিজিএম আব্দুর রব জানান, ঝড়ে উপজেলার কোলা ও জামাল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের কমপক্ষে ৮ টি বিদ্যুতের পোল উপড়ে গেছে। এছাড়াও ভেঙ্গে পড়া গাছের ডালপালায় তার ছিড়ে গেছে যা মেরামতের জন্য সকাল থেকে কাজ চলছে।