তওবার উসিলায়
ঝিনাইদহের চোখঃ
এক যুবক ওলামায়ে কেরামের মজলিসে যাতায়াত করতো।কোন বয়ানে যখন আল্লাহ তায়ালার সিফাতী নাম ‘ইয়া সাত্তারু’ শুনতো, তখনই সেই যুবক দিওয়ানা হয়ে চিৎকার করে উঠতো। যুবকের এ আচরণ সর্ম্পকে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বললো,এক সময় আমি মেয়েদের পোশাক পরে মেয়েদের মহলে যাতায়াত করতাম।একবার আমি এক বাদশাহর মেয়ের বিয়েতে গেলাম। আর সেই বিয়ের মজলিশে বাদশার মেয়ের গলার হার চুরি হয়ে যায়। সাথে সাথে রাজ প্রহরীরা মহলের সমস্ত দরজা বন্ধ করে দিয়ে মজলিশে আগত সকল মহিলার দেহ তল্লাশি শুরু করলো। আমি এ অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে গেলাম। ভাবলাম নিশ্চিত আজ আমি ধরা পড়ে যাবো।
ভয়, লজ্জা, আর অনুশোচনায় আমার গলা শুকিয়ে গেল। এখন কি হবে আমার? ধরা পড়লে ভয়ংকর শাস্তি নিশ্চিত। একে একে সবার তল্লাশী শেষ হলো।আর একজনের পরেই আমার পালা, এ সময় আমি কায়মনবাক্যে আল্লাহ তায়ালার দরবারে আরজ করলাম। হে আমার পরওয়ার দিগার!আমি এ কঠিন বিপদ থেকে উদ্ধারের কোন উপায় দেখছি না। কিন্ত তুমি ইচ্ছা করলে আমাকে হেফাজত করতে পারো। আমি তওবা করছি,জীবনে আর কখনো নারীর বেশ ধরে চলবো না।তুমি আমাকে হেফাজত করো।আমি যখন মনে মনে এ দোয়া করছিলাম,তখন আমার সামনের মেয়েটির দেহ তল্লাশী চলছিলো। এমন সময় রাজমহলে হৈ চৈ পড়ে গেল।
অর্থাৎ আমার সামনের মেয়েটির কাছেই চুরি হয়ে যাওয়া হারটি পাওয়া গেছে। ফলে আর আমার দেহ তল্লাশী করা হলো না।এভাবেই মহান রাব্বুল আলামীন আমাকে হেফাজত করলেন।আর আমিও অনেক বড় একটা বিপদ থেকে রক্ষা পেয়ে গেলাম। এ ঘটনার পর থেকে যখনই আমি আল্লাহ তায়ালার ছিফাতী নাম ‘ইয়া সাত্তারু’ (অপরাধ গোপনকারী)নাম শুনি, তখনই আমার নিজের সেই অপরাধের কথা, এবং আল্লাহ তায়ালার ক্ষমার কথা স্মরণ হয়। ঐ সময় আমি আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না। আল্লাহু আকবার!!! সত্যিই! ভাবতে গেলে দেখা যাবে ‘তওবা’ আল্লাহ তায়ালার সব নিয়ামতের মধ্যে অন্যতম একটা বিশেষ নিয়ামত।
কোন পাপ কাজ করে, লজ্জিত হয়ে , নিজের ভুল টাকে বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পার্থনা করে, সেই ভুলটাকে শুধরিয়ে নিয়ে,তওবার মাধ্যমেই আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করা টা খুব সহজ হয়ে যায়। আর তওবাকারীকে আল্লাহ তায়ালা কখনই নিরাশ করেন না। #হে আল্লাহ, তুমি আমাদের কে সহীহ ভাবে তওবা করার তাওফিক দান করো।