কোটচাঁদপুরটপ লিড

ঝিনাইদহে কেঁচো খুঁড়তে গোখরো

কাজী মৃদুল, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভাধীন বড়বামুন্দা রেলগেট এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় আটক শৈলকুপা উপজেলার চরমালিথিয়া গ্রামের মৃত মান্নানের ছেলে সবুজ শেখকে রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ কেঁচোর সন্ধান করতে গিয়ে খোদ গোখরো সাপের সন্ধান পেল। সে শৈলকূপার সবুজ শেখ নয়, তার প্রকৃত পরিচয় সে কুষ্টিয়ার খোকসা থানার ভয়ংকর সন্ত্রাসী সাগর। এর পরই তাকে নিয়ে পাবনা, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, শৈলকূপা ও ঝিনাইদহ পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়।

গ্রেপ্তারকৃত সাগরের প্রকৃত পরিচয় পাবার পর পুলিশ বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলার সন্ধান পেয়েছে। মামলাগুলো হচ্ছে ডাকাতি, হত্যা ও বিস্ফোরকের। এ ছাড়াও কয়েকটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সে।

কোটচাঁদপুর থানায় ডাকাতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (পরিদর্শক তদন্ত) ইমরান আলম বলেন, ডাকাতির কিছু স্বর্ণালংকারসহ গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া নাম ও পাসপোর্টের ফটোকপি দেখে সবুজ শেখ (২৫) নামে গত ৫ মে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় আদালতে তাকে রিমান্ড চাওয়া হয়। পরবর্তীতে আদালত আসামিকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা (পরিদর্শক-তদন্ত) ইমরান আলম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সবুজ শেখ স্বীকার করে এর আগে তার নাম, পিতার নাম, বাড়ির ঠিকানা সে ভুল দিয়েছিল। তার প্রকৃত নাম সাগর আলী, পিতার নাম আব্দুল কুদ্দুস, গ্রাম শেখপাড়া বিহারিয়া, থানা খোকসা, জেলা- কুষ্টিয়া। অথচ কোটচাঁদপুরে ডাকাতির স্বর্ণলংকারসহ গ্রেপ্তার হলে সে তার নাম বলে সবুজ শেখ, পিতা মৃত মান্নান শেখ, গ্রাম চরমালিথিয়া, থানা শৈলকূপা, জেলা ঝিনাইদহ।

পুলিশ সাগর আলীর প্রকৃত পরিচয় পেয়ে জানতে পারে সে একজন ভয়ংকর সন্ত্রাসী। পাবনা, রাজবাড়ী, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ জেলাতে অগণিত ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত গ্রেপ্তারকৃত এই সাগর আলী। তার বিরুদ্ধে এ সকল জেলার থানাগুলোতে ১২টি মামলার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। মামলা গুলির মধ্যে রয়েছে ৯টি ডাকাতি, ১টি হত্যা, ১টি অস্ত্র, ১টি বিস্ফোরক আইনে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় তাকে জেল দেয়া হয়েছে।

কোটচাঁদপুর থানার পরিদর্শব (তদন্ত) ইমরান আলম বলেন, আসামি সাগর আলীর স্বজনরাও সাগরের প্রকৃত পরিচয় গোপন রেখে ভুয়া নামে (সবুজ শেখ) শৈলকুপা উপজেলার ৮ নম্বর ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চারিত্রিক ও নাগরিকত্ব সনদপত্র নিয়ে আদালতে জমা দিয়েছেন তাকে জামিনের জন্য। এই সনদে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান স্বাক্ষর করেছেন ৮ মে ২০১৯ তারিখে।

বিষয়টি জানতে শৈলকুপা উপজেলার ৮ নম্বর ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সবুজ শেখ নামে আমি কাউকে সনদ দিইনি। এটা জাল হতে পারে। আমরা অনেক সময় বিশ্বাসের ওপর সনদ দিয়ে থাকি। তবে সনদ দেওয়ার বিষয়ে আমি সতর্ক হয়ে গেলাম।

এর আগেও আসামি সাগর আলী নিজে তার পরিচয় গোপন রেখে সবুজ শেখ নামে পাসপোর্ট করেছিল। পুলিশের ধারণা গত ৫ বছর ধরে জন প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সাগর আলী ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে ডাকাতিরসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছে। এটা এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সূত্রঃ কালের কন্ঠ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button