কোটচাঁদপুরটপ লিড

ঝিনাইদহে ৬৬০ বস্তা চালসহ ট্রাক আটক

সুমন মালাকার, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থেকে বিশেষ বরাদ্দের চাল চোরাই পথে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকসহ ৬৬০ বস্তা চাল আটক করেছে পুলিশ। তবে কোটচাঁদপুর খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সুপারিশে তা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান কোটচাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহ উদ্দীন। পুলিশের এই কর্মকর্তাা ভাষ্য ট্রাক ভর্তি ২০ মেট্রিক টন চাল কোটচাদপুর এলএসডি গুদাম থেকে উত্তোলন করা হয়েছিল। বিষয়টি আমরা উপজেলার প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি। তারা তদন্ত শেষে মামলা দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব। শনিবার বিকালে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে কোটচাঁদপুর ও জীবননগর সড়কের তুষার সিরামিক ফ্যাক্টরীর কাছে পুলিশ আটক করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এড. শফিকুল আজম খান চঞ্চলের বিশেষ বরাদ্দের ৬৬০ বস্তা চাল। যা শনিবার গোডাউন থেকে উত্তোলন করা হয়েছিল।

এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা শ্রমিকদের মজুরী পরিশোধের জন্য চাল বিক্রি করতে পারে এমন দাবি করলেও স্থানীয়রা বলছে গোডাউনের খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও চেয়ারম্যানদের কারসাজিতে অবৈধভাবে চাল বিক্রি করা হচ্ছি বলে অভিযোগ করে।

কোটচাদপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল আজিজ জানান, এ চাউলগুলো ছিল কোটচাদপুর খাদ্য গুদামের। এগুলো উপজেলার এলাঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, সাফদারপুর ইউপি চেয়ারম্যান নওশের ও বলুহরের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনসহ ৫ জনের নামে এই চাল উত্তোলন করা হয়। তারা চাল তুলে কোথায় দিল সেটি আমি বলতে পারবো না। কবে তুলেছে সেটিও আমি জানিনা। তবে আটক চালগুলো কোটচাদপুর গুদামের ছিল তা নিশ্চিত করেন এই খাদ্য কর্মকর্তা।

খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নওশের জানান, এলাঙ্গী, সাফদারপুর ও বলুহর ইউনিয়নের জন্য কাবিখা’র এ চাল তোলা হয়েছিল শনিবার। চেয়ারম্যানগন চাল তুলে কোথায় নিয়ে গেল সেটি তো আসলে আমাদের জানার কথা নয়। তবে, প্রশাসনকে না জানিয়ে ছুটির দিনে চাল উত্তোলন ভুল হয়েছে বলে স্বিকার করেন তিনি।

সাবদারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশের আলী বলেন, আমাদের কোন চাল বিক্রির জন্য জীবননগর নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল না। তাছাড়া এমন খবর আমার জানাও নেই।

এ ব্যাপারে কোটচাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানার ভাষ্য, এটি এমপি সাহেবের বিশেষ বরাদ্দ অর্থাৎ চেয়ারম্যানদের প্রকল্পের চাল ছিল যেটি কাবিখা’র। প্রকল্পের কাজ আগেই শেষ হয়েছিল কিন্তু তারা মন্ত্রণালয় থেকে ডিও ডেট বাড়িয়ে শনিবার উত্তোলন করেছে। তাছাড়া চেয়ারম্যানরা তাদের চাল রাখবে নাকি বিক্রি করে শ্রমিকদের মজুরী পরিশোধ করবে তারাই ভালো জানে। এটি আমাদের বিষয় না। আটককৃত চাল ও ট্রাক ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, বিষয়টি সম্পূর্ণ সত্য। কিসের জন্য কারা চালগুলো জীবননগর নিয়ে যাচ্ছিল সেটি তদন্ত করতে উপজেলা নির্বাহী আফিসার নাজনীন সুলতানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button