ঝিনাইদহে যৌন সহিংসতার শিকার হয়ে হাসপাতালে ৩৭ জন ভর্তি
সাদ্দাম হোসেন, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহে ধর্ষণ, নির্যাতনসহ সহিংসতার ঘটনা প্রতিবছর বেড়েই চলেছে । জেলা পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৬-১৯ পর্যন্ত ধর্ষণ মামলার সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনকহারে। সহিংসতার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অনেকেই। এতে জনমনে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। পাশাপাশি দোষীদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে সাধারণ মানুষের।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পেতœীপাড়া গ্রামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মামলা করেন তার বাবা। এরপর থেকে পলাতক অভিযুক্তর পরিবার। ধর্ষণ ও নির্যাতনের এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে ঝিনাইদহে। কিন্তু অপরাধীরা বরাবরই থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।
জেলা পুলিশের গত ৩বছরের তথ্য বলছে, ২০১৬ সালে ঝিনাইদহে যে পরিমাণ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, পরের বছর তা বেড়েছে। এরপর ২০১৮ সালে সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে। ২০১৬ সালে ১৮টি ধর্ষণের মামলা হয়, ২০১৭ সালে ২৪ টি মামলা হয়, ২০১৮সালে ৩১টি মামলা হয় । অবশ্য হাসপাতালের তথ্য আরো বেশী। ধর্ষনের ঘটনা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে সদর হাসপাতালে ২০১৬ সালে ৪৭ জন, ২০১৭ সালে ৭৭জন এবং ২০১৮ সালে ৯৮ জন ভর্তি হয় ।
এদিকে চলতি বছরের এ পর্যন্ত ঝিনাইদহে ধর্ষণের মামলা হয়েছে ১৪টি। আর যৌন সহিংসতার শিকার হয়ে হাসপাতালে ৩৭ জন ভর্তি হয়েছে বলে পুলিশের এক তথ্যে জানা গেছে।
ধর্ষণের ঘটনা বাড়ার কথা স্বীকার করে পুলিশ বলছে, পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে অনেক সময় আসামিরা ছাড়া পেয়ে যায়। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস জানান, ধর্ষণ ও যৌন সন্ত্রাসের জন্য সামাজিক অবক্ষয় অনেকাংশে দায়ী তবে এটা রাতারাতি বা জোর-জুলুম করে বন্ধ করা যাবে না, সামাজিক বিপ্লব গড়ে তুলতে হবে ।
এদিকে মামলার দীর্ঘসূত্রতা, বিচারহীনতার সংস্কৃতিসহ নানা কারণে ভুক্তভোগীরা বিচার পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেন মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংগঠন এর ঝিনাইদহ জেলাশাখার সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান টুকু ।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. অপূর্ব কুমার জানান, এসব ঘটনায় সঠিক বিচার পেতে হলে এবং ধর্ষণ কমিয়ে আনতে হলে তথ্যÑপ্রমাণ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে । তিনি বলেন ধর্ষণ ঘটনার ৭২ ঘন্টার মধ্যে ভিকটিম কে হাসপাতালে আনতে হবে । তাহলে আলামত সঠিক ভাবে পাওয়া যায় এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা ও রিপোর্ট দিলে প্রকৃত আসামীদের আইনের আওতায় আনা সহজ হবে ।