‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ নিয়ে নতুন যে বার্তা দিল চীন
ঝিনাইদহের চোখঃ
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ (বিআরআই) নতুন সুযোগ নিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন চীনের ইউনান প্রদেশের তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক তিয়ান হুকুইং। তিনি বলেন, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে গুরুত্ব দিয়ে চীন বিআরআইয়ের দ্রুত বাস্তবায়নে সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
রোববার সন্ধ্যায় সেকেন্ড চায়না সাউথ এশিয়ার কো-অপারেশন ফোরামে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সাংবাদিকদের স্বাগত জানায় ইউনান প্রদেশের কর্মকর্তারা। এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মালদ্বীপ এবং ইন্দোনেশিয়ার সাংবাদিকরা অংশ নিচ্ছেন।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেছেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রবর্তিত বিআরআইয়ে বাংলাদেশকে তার উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে।
আঞ্চলিক অন্যান্য উদ্যোগ এবং যে কোনো দেশের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে তিনি আগত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিআরআই নিয়ে আমাদের চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা পরিষ্কারভাবে জোর দিয়ে বলতে চাই, বিআরআইয়ের উদ্যোগে সবাই লাভবান হবে। আমরা সবাই এ সকল উদ্যোগ থেকে লাভবান হতে পারি।
ড. রিজভী এ বিষয়টি স্পষ্ট করেন যে, বিআরআইয়ে বাংলাদেশের সমর্থন ও অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অন্যান্য উদ্যোগে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকছে না এবং কোনো দেশের সঙ্গে দ্বন্দ্বও থাকবে না।
তিয়ান হুকুইং বলেন, ‘ইউনান প্রদেশের সঙ্গে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। বর্তমানে ইউনান প্রদেশ বিআরআইয়ের উদ্যোগের মধ্য দিয়ে নীতি, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, বাণিজ্য সুবিধা, অর্থায়ন এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করছে।’
মানুষে মানুষে যোগাযোগে গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে তিয়ান হুকুইং বলেন, ‘মানুষে মানুষে যোগাযোগে গণমাধ্যম শুধু একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম নয়, গণমাধ্যম আঞ্চলিক একীভূতকরণ এবং সামাজিকতা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া শান্তি ও বন্ধুত্ব বাড়াতে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।‘
২০১৩ সালে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ নামে একটি উন্নয়ন কৌশল ও কাঠামো উপস্থাপন করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিং।
এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের ৬০টি দেশের সঙ্গে চীনের মূল ভূখণ্ডকে সংযুক্ত করা। এই পরিকল্পনার অংশ মূলত দুটি। সড়ক পথে মধ্য এশিয়া ও ইউরোপের সঙ্গে সংযুক্ত হবে চীন। এই সড়ক পথের সঙ্গে রেলপথ ও তেলের পাইপলাইনও রয়েছে। সেই সঙ্গে সমুদ্রপথেও, বিশেষ করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত হবে চীন।
বলা হয়ে থাকে, প্রাচীন সিল্ক রুটের আধুনিক সংস্করণ ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রুট’। ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিংয়ের ঢাকা সফরের সময় ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ যোগ দেয়।
ঢাকার চীনা দূতাবাসের তথ্য অনুযায়ী, চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০১৮ সালে দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হয়ে ওঠে। বাংলাদেশ ও চীনের দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য বছরে ১৬.৮ শতাংশ বেড়ে ১৮.৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।