ঝিনাইদহের ২০ বছর বয়সী সেই শিশু চম্পা এখন হাটতে শিখেছে!
#আসিফ ইকাবল কাজল, ঝিনাইদহের চোখঃ
চার মাস আগে পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২০ বছর বয়সী “শিশু” চম্পার দুর্বিসহ জীবন কাটানোর খবর প্রকাশিত হলে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন শিশু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ অলোক কুমার সাহা। সেই চম্পা এখন হাটতে পারে। দুষ্টামি ও খুনসুটি করে বোন ও মায়ের সাথে।
অথচ চার মাস আগেও চম্পার কোন নড়াচড়া ছিল না। সারাক্ষন মা ও বোনের কোলে চেপে বেড়াতো। কোন অনুভুতি ছিল না। ঝিনাইদহ শহরের আলফালাহ হাসপাতালে প্রফেসর ডাঃ অলোক কুমার সাহার চেম্বারে গিয়ে দেখা যায় চম্পা হেটে বেড়াচ্ছে। মা ও বোনর সাথে করছে দুষ্টামি।
চম্পা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের হাসেম আলী মোল্লার মেয়ে। ২০ বছর বয়সী চম্পা খাতুন “শিশু” কেবল হাসতে আর কাঁদতে পারতো। বয়স বাড়লেও বাড়েনি অঙ্গ প্রত্যাঙ্গ। নেই শরীরের কোন পরিবর্তন। যে বয়সে পড়ালেখা বা বিয়ের রঙ্গিন স্বপ্ন থাকার কথা সেই বয়সে চম্পা মায়ের কোলে চেপে বসে থাকে। বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধি হিসেবে সমাজসেবা থেকে তার নাম নিবন্ধিত (নিবন্ধন নং ১৯৯৯৪৪১১৯৮৯৯৮৯৭৯০-১১) হলেও এখনো ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড।
চম্পা খাতুনের মা মিনুয়ারা বেগম জানান, ১৯৯৯ সালের ২৮ এপ্রিল চম্পা খাতুনের জন্ম। জন্মের পর থেকে সে বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধি। আচরণ করে শিশুর মতো। কোন কথা বলতে পারে না। কেবল হাসতে আর কাঁদতে পারে। সারাক্ষন মানুষের কোলে কোলেই তার দিন কাটে।
বড় বোন ময়না খাতুন জানান, ২০ বছর বয়স হলেও চম্পা এখনো শিশুর মতোই রয়ে গেছে।
মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও ঝিনাইদহের প্রাইভেট প্র্যাকটিশনার বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ অলোক কুমার সাহা জানান, এই রোগটিকে বলে থাইরয়েডিজম (Hypothyroidism)। শিশু কাল থেকে চিকিৎসা করা হলে রোগটি ভাল হতো। কিন্তু এখন তার শরীরীক বৃদ্ধির বিষয়টি রয়েছে ঝুকির মধ্যে।
তিনি বলেন, থাইরয়েড পরীক্ষার পর এই রোগের চিকিৎসা শুরু করে চার মাসে চম্পা হাটতে শিখেছে।