হাঁটুর ব্যথা কমবে ঘরোয়া ৭ উপায়
#ঝিনাইদহের চোখঃ
হাঁটু ব্যথার রোগী প্রায় প্রতিটি পরিবারেই দেখতে পাওয়া যায়। এর বিভিন্ন কারণের মধ্যে প্রধান কারণ অস্টিও আর্থ্রাইটিস বা অস্থিসন্ধির ক্ষয়জনিত কারণ। আমাদের দেহের প্রতিটি সন্ধি বা জয়েন্টের মতোই হাঁটুর জয়েন্টের হাড়ও নরম এবং মসৃণ আবরণ বা কার্টিলেজ দ্বারা আবৃত। এই কার্টিলেজ যখন ক্ষয় হয়ে অমসৃণ আকার ধারণ করে তখন জয়েন্ট নাড়াচাড়ায় ব্যথা অনুভূত হয়, জয়েন্ট ফুলে যায়। এটি অস্টিও আর্থ্রাইটিস বা হাঁটুর এক প্রকার বাত।
চিকিৎসকরা শরীরচর্চার ঘাটতি, অনিয়মিত খাবার-দাবার এবং ক্যালসিয়ামের অভাবকে হাঁটু ব্যথার জন্য দায়ী করে থাকেন। প্রথম প্রথম অবস্থায় হাঁটু ব্যথাকে গুরুত্ব দেয়া হয় না। পরে যখন পরিস্থিতি হাতের বাইরে যায়, তখন ওষুধ ছাড়া আর উপায় থাকে না।
হাঁটু আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি জয়েন্ট। এটি পায়ের স্থায়িত্ব, নমনীয়তা রক্ষা করতে সাহায্য করে। ধূমপান, মদ্যপান, বেশি সোডিয়াম খাওয়া, পুষ্টির ঘাটতি হাঁটুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। হাঁটুর ব্যথা অনেককেই ভোগাচ্ছে। বয়স একটু বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এ সমস্যা গুলো দেখা দেয়।
তাই হাঁটু ব্যথায় ওষুধের উপর নির্ভরশীল হওয়ার আগেই এটি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি ঘরোয়া উপায় প্রয়োগ করে হাঁটু ব্যাথার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। যা আপনাকে ব্যথা থেকে উপশম করবে। জেনে নিন সেই সহজ উপায়গুলো :
হলুদ-আদার মিশ্রণ
দুই কাপ পানির সঙ্গে হলুদ আর আদা ফুটিয়ে নিন। ফুটে যখন মোটামুটি আধাকাপের মতো হয়ে যাবে তখন সেটিকে আঁচ থেকে নামিয়ে হলুদ-আদার ওই মিশ্রণে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন। দিনে অন্তত দুই বার এই মিশ্রণ খেলে পেইন কিলার ছাড়াই হাঁটুর ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।
লবণ পানির সেঁক
এপসম সল্ট বা ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সমৃদ্ধ সৈন্ধব লবণ যে কোন ব্যথা-বেদনার উপশমে অত্যন্ত কার্যকরী। ছোট এক কাপ সৈন্ধব লবণ পানিতে গুলে নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার সেটা ফুটিয়ে ব্যথার জায়গায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ধরে সেঁক দিন। এভাবে নিয়মিত সেঁক দিলে হাঁটুর ব্যথায় দ্রুত উপকার পাওয়া যেতে পারে।
ঠান্ডা-গরম সেঁক
হট ওয়াটার ব্যাগে গরম পানি ভরে ব্যথার জায়গায় ৫ মিনিট সেঁক দিন। জায়গাটা গরম হয়ে উঠলে সেখানে বরফ ঘষে মালিশ করুন। এই পদ্ধতিতে মোটামুটি ৩০ মিনিট গরম-ঠান্ডা সেঁক দিন। এর ফলে হাঁটুর ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।
উষ্ণ পানিতে মেথি
যে কোন জ্বালা-যন্ত্রণা দ্রুত কমাতে মেথি অত্যন্ত কার্যকরী। হাঁটুর ব্যথায় কষ্ট পেলে নিয়মিত সামান্য উষ্ণ পানিতে মেথি ভিজিয়ে খেয়ে দেখুন। এছাড়া সারারাত এক গ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে এই পানি খেলেও ব্যথায় উপকার পাবেন।
মরিচগুঁড়া-নারিকেল তেলের মিশ্রণ
চিকিৎসকদের মতে হাঁটুর ব্যথা কমাতে ক্যাপসাইসিন অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। লাল মরিচে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে এই ক্যাপসাইসিন। আধা কাপ নারিকেল তেলে দুই চামচ মরিচগুঁড়া মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় অন্তত ২০ মিনিট মালিশ করুন। এরপর উষ্ণ পানি দিয়ে ভাল করে পরিষ্কার করে নিন। দিনে অন্তত দুই থেকে তিন বার এই পদ্ধতিতে মালিশ করলে হাঁটুর ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে।
গাজর ও লেবুর মিশ্রণ
মাঝারি মাপের দুটি গাজরের রস করে তাতে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে সেটি খালি পেটে খেয়ে নিন। নিয়মিত এই মিশ্রণ খেলে অল্প সময়ের মধ্যেই হাঁটুর ব্যথায় উপকার পাওয়া যেতে পারে।
পিপারমিন্ট আর ইউক্যালিপটাস তেল
ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে পিপারমিন্ট এবং ইউক্যালিপটাস তেলের জুড়ি মেলা ভার! ৫ থেকে ৬ ফোটা পিপারমিন্ট আর ইউক্যালিপটাস তেলের সঙ্গে নারিকেল, ওলিভ বা আমন্ড তেল মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় নিয়মিত মালিশ করলে হাঁটুর ব্যথায় দ্রুত আরাম পাবেন।