কোটচাঁদপুরটপ লিড

ঝিনাইদহের পাটচাষীরা মহাবিপাকে

#ঝিনাইদহের চোখঃ

দেশের নদীবিধৌত জেলাগুলো বানের জলে ভাসলেও ঝিনাইদহের জলাশয়গুলোতে পাট জাগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি নেই। ফলে জাগ দিতে পারবেন না, এই আশঙ্কায় এখনও জমি থেকে পাট কাটা শুরু করেননি কৃষকেরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, এ বছর জেলার ছয় উপজেলায় ২০ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৯০০, কালীগঞ্জে ১ হাজার ৩৪০, কোটচাঁদপুরে ৬৫০, মহেশপুরে ৩ হাজার ১৫০, শৈলকুপায় ৭ হাজার ১৩৫ ও হরিণাকুন্ডুতে ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে।

কিন্তু পাট কাটার উপযুক্ত সময় হলেও মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পাট কাটতে ব্যস্ততা নেই কৃষকদের। দু’একজন কৃষক ধান লাগানোর জন্য পাট কাটছেন। তবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তারা।

শৈলকুপা উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের চাষি আব্দুল মালেক জানান, এ বছর তিনি আড়াই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। জমির আশপাশের পুকুর বা ডোবায় পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে হচ্ছে দূরে। দূরবর্তী নদী বা বিলে জাগ দিতে গাড়ি বা ভ্যান ভাড়া লাগছে প্রতি আঁটি ৩/৪ টাকা। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

একই উপজেলার পুরাতন বাখরবা গ্রামের চাষি মনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। পাট কাটতে শ্রমিকরা বিঘা প্রতি দুই হাজার টাকা করে নিচ্ছে। জাগ দিতে প্রতি আঁটি দুই টাকা ও ধুতে প্রতি আঁটি তিন টাকা করে নিচ্ছেন। শুরু থেকে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রতি বিঘা পাট চাষে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। পাট হয় ১০ থেকে ১১ মণ। এখন পাটের যে বাজার মূল্য আছে, তাতে কিছুটা লাভ থাকবে। বাজার পড়ে গেলে লাভ থাকবে না।

সদর উপজেলার উদয়পুর গ্রামের কৃষক রাসেল হোসেন বলেন, পাট কাটার সময় হয়ে গেছে। কিন্তু পানি না থাকায় পাট কাটতে পারছি না। আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করছি, যদি নদীতে পানি হয় তাহলে পাট কাটব।

একই এলাকার কৃষক জামিরুল ইসলাম বলেন, জমিতে ধান লাগানোর জন্য পাট কাটছি। নদীতে পানি না থাকার কারণে বাড়ির পাশের পুকুরে সেচ দিয়ে সেখানে পাট জাগ দেব। এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এখন বাজারে ১৪০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আর একটু দাম পেলে সেই খরচটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জি এম আব্দুর রউফ বলেন, এ বছর পাটের দামও ভালো আছে। তবে পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। অনেক স্থানে চাষিরা পাট কেটে জমিতে ফেলে রেখেছেন। ভারী বৃষ্টির অপেক্ষোয় আছেন তারা। খাল-বিলে পানি জমলে জাগ দিতে পারবেন তারা।

সূত্রঃ বার্তা২৪

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button