ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে অন্ধকার বাড়ি
#ঝিনাইদহের চোখঃ
বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে ব্যাপক ভাবে। ডেঙ্গুর কারণে সকলের মাঝে ভায়াবহ আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে রাজধানীবাসি চরম আতঙ্কে আছেন। এ অবস্থায় সকলেই মশা হাত থেকে রক্ষা পেতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফলে ডেঙ্গুর হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের এ সম্পর্কে পূর্ন ধারনা থাকা আবশ্যক।
ডেঙ্গুর বাহক এডিস ইজিপ্টি মশা দিনের দুটি সময় কামড়ালেও বিশেষ করে অন্ধকার, স্যাঁতস্যাঁতে বাড়িতে এই ধরনের মশা দিনভরই কামড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন একজন কীটতত্ত্ববিদ।
ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তারের মধ্যে দেশবাসীর উদ্বেগ ও আতঙ্কের মধ্যে কীভাবে এ থেকে দূরে থাকা যায় তা নিয়ে পরামর্শ চাইছে বহু জন। সাধারণভাবে বলা হয়, পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি দিনের দুটি সময় মশা যেন কামড়াতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সাধারণ কিউলেস মশার সঙ্গে ডেঙ্গুর বাহক এডিস ইজিপ্টি মশার জীবনাচরণ এবং অভ্যাসের পার্থক্য আছে। সাধারণ মশা দিন রাত যেকোনো সময় সুযোগ পেলেই কামড়ালেও এডিস মশা কামড়ায় যখন নরম আলো থাকে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার শরীফুল ইসলাম বলেন, তীব্র রোদের আলোয় বা খুব অন্ধকারে এডিস মশা কামড়ায় না। তবে সূর্য উঠার পর এবং অন্ধকার হওয়ার আগ মুহূর্তে তারা সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। এডিস মশা রাতের অন্ধকার পছন্দ করে না। আবার তীব্র রোদও পছন্দ নয়।
তবে সাধারণ এই সূত্র ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকা বাসাবাড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। রাজধানীর বহু এলাকায় গা ঘেঁষে ভবন তৈরি হওয়ায় সেগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো পৌঁছে না। এখানে দিনভর হালকা আলো থাকে। এই পরিবেশ এডিস মশা বেশি আক্রান্ত করে থাকে। আবার কম আলো দেওয়া লাইটগুলোও নিরাপদ না বলে এসব পরিবেশে এই মশাগুলো সারাদিনই কামড়াতে পারে।
এছাড়া দিনের বেলায় খাবার টেবিলের নিচে হালকা আলো থাকায় সে সময় স্থির হয়ে বসে থাকা মানুষকে এডিস মশা কামড়াতে পারে।
তাহলে এসব বাড়ির বাসিন্দাদের কী করণীয়?
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক শরীফুল বলেন, যে ঘরে পর্যাপ্ত আলো থাকে না, সেখানে ভালো মানের কয়েকটা লাইট ব্যবহার করতে হবে। অতিরিক্ত আলো হলেই অনেকটা সুরক্ষিত থাকা সম্ভব।
ডেঙ্গু বিস্তারের এই সময়ে একটি দুটি মশা থাকলে সেটাকেও অবহেলা না করার পরামর্শ দিয়েছেন এই কীটতত্ত্ববিদ। বলেন, ‘দিনের বেলায় আমরা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকায়, অনেক নড়াচড়া হওয়ায় এডিস মশা স্থির হয়ে থাকে। পুরো রক্ত এক ব্যক্তি থেকে নিতে না পারায় অন্যদের কামড়ায়। পরে যাকেই কামড়াবে তার শরীরেই জীবাণু প্রবেশ করবে। তাই একটি ভবনে যদি কয়েকটি এডিস মশাও থাকে তবে অনেককেই কাবু করে ফেলতে পারে।
অধ্যাপক শরীফুল মশা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার চেয়ে সচেতনতা আর পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘর বা আঙ্গিনার কোথাও পানি কমে থাকতে দেওয়া যাবে না। কারণ, এসব পানিতেই জন্ম নেয় এডিস মশা। আবার ময়লা আবর্জনা যেন যেখানে সেখানে পরে না থাকে, সেদিনে লক্ষ্য রাখতে হবে।