উৎসাহ-উদ্দীপনায় উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা
#ঝিনাইদহের চোখঃ
দেশজুড়ে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনায় উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। আজ সোমবার ঈদের দিন সকালে নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিরা দেশ, জাতি ও মুসলিম জাহানের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। তারপর আবাল-বৃদ্ধবনিতা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় দেশের ধর্মপ্রাণ লাখো-কোটি মানুষ ঈদগাহ, মসজিদ ও খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করছেন। সারা দেশে রৌদ্রোজ্জ্বল সকাল থাকায় ঈদের আনন্দ যেন বেড়েছে কয়েক গুণ। কাতারে কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
ঈদুল আজহার নামাজের পর রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে পশু কোরবানি। গত কয়েকদিন টানা গরম আর রাতে সামান্য বৃষ্টিতে সকালে পশু কোরবানি নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তায় ছিল রাজধানীবাসী। তবে সকাল থেকে ঝলমলে রোদ কাটিয়ে দিয়েছে শঙ্কার মেঘ।
সামর্থ্যবান মানুষ তাদের কেনা গরু, ছাগল ও অন্যান্য পশু কোরবানি, চামড়া ছাড়ানো এবং মাংস কাটাকাটিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। রাজধানীর অলিগলি পশু জবাইয়ের পর মাংস বানানোয় ব্যস্ত। রাজধানীতে আজ সকাল ৭টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল ৮টায় আরেকটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদুল আজহার প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায় শুরু হয়। এ জামাতে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনৈতিকসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নামাজ আদায় করেন। পরে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
নামাজ আদায় শেষে বাসায় ফিরে মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করবেন। এর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে। এর আগে সকাল থেকেই মুসল্লিরা নামাজ আদায়ের জন্য ঈদগাহে ভিড় জমান।
এদিন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বঙ্গভবনে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেবেন।
মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলীয় নেতাকর্মী, বিচারক, বিদেশি কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
এবার ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির উদ্যোগে রাজধানীর ৫৮২টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় জাতীয় ঈদগাহের প্রধান জামাতসহ ঈদুল আজহার ৩১২টি এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭০টি স্থানে জামাত অনুষ্ঠিত হবে। পশু কোরবানির জন্যও জায়গা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে সিটি করপোরেশন।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি ভবন ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এ ছাড়া ‘ঈদ মোবারক’ লিখিত ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইটপোস্টে প্রদর্শিত হচ্ছে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়।
প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) নিজ পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়।
হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ পাকের অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকে।