#তারেক মাহমুদ, ঝিনাইদহের চোখঃ
পঞ্চদশ শতাব্দির রাজধানী খ্যাত শাহ মোহাম্মদাবাদে পর্যটন এলাকা ও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর স্থাপন প্রয়োজন। বর্তমানে যার নাম বারোবাজার। বারোবাজারটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দক্ষিণে আর যশোর জেলা শহর থেকে ১৭ মাইল উত্তরে অবস্থিত।
ঢাকা খুলনা মহাসড়কের দুই ধারে শত শত পুকুর ও দিঘির স্বচ্ছ পানির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঢেউ আর বুড়ি ভৈরব নদীর তীরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যঘেরা আর ঐতিহাসিক মসজিদ পরিবেষ্টিত এই বারোবাজার। জানা যায়, বারোজন আউলিয়ার নামানুসারে এখানকার নামকরণ করা হয়। আউলিয়ারা হলেন এনায়েত খাঁ, আবদাল খাঁ, দৌলত খাঁ, রহমত খাঁ, শমসের খাঁ, মুরাদ খাঁ, হৈবত খাঁ, নিয়ামত খাঁ, সৈয়দ খাঁ, বেলায়েত খাঁ ও শাহাদত খাঁ।
এই বারোবাজারকে পর্যটন এলাকা ও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর স্থাপনের দাবিতে সম্প্রতি স্থানীয় কিছু ব্যক্তি সামাজিক আন্দোলন শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলনে প্রচার-প্রচারনাসহ নানা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু তাদের এই দাবির সঙ্গে একমত ঘোষণা করে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
আউলিয়াদের পুণ্যভূমি বারোবাজারে রয়েছে ইতিহাস প্রসিদ্ধ গাজি-কালু-চম্পাবতীর মাজার। রয়েছে সুলতানি শাসন আমলের ১৯টি মসজিদ। যা এতদিন মাটির নিচে ঢাকা ছিল। এখনো মাটির নিচে ঢাকা রয়েছে ৭টি মসজিদ। এছাড়া দিঘি রয়েছে ২০টি। কিন্তু ইতিহাস থেকে পাওয়া যায় ১২৬টি দিঘি। কালের বিবর্তনে সব হারিয়ে গেছে। অনেক স্থান দখল হয়ে গেছে। প্রায় ১০ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে রয়েছে বহু অজানা প্রত্ন সম্পদে ভরপুর।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ আনোয়ারুল আজীম আনার বলেন, বারোবাজার এলাকা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে ভরপুর। ১৯৯২ সালের দিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বেশ কিছু ঢিবি খুঁড়ে এই নিদর্শনগুলো উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর জোর দাবি এখানে পর্যটন এলাকা ও জাদুঘর স্থাপনের। তিনি বলেন, এ-সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণাদি যদি আমার কাছে দেয়া হয় তাহলে তিনি পর্যটন এলাকা ও জাদুঘর স্থাপনের জন্য সংসদে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করবেন।
বারো আওলিয়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি এম আলমগীর হুসাইন জানান. তারা বারোবাজারের প্রাচীন ঐতিহ্য রক্ষা আন্দোলন নামের এই ফেসবুক গ্রম্নপের মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন শুরু করেছেন। বিশেষ করে বারোবাজারে আবিষ্কৃত হওয়া মধ্যযুগের সুলতানি শাসনামলের নদীবন্দর কেন্দ্রিক শহর মোহাম্মদাবাদের সাবেক রূপ বাস্তবায়ন এবং এর সঠিক ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মকে জানাতেই আন্দোলন করছেন বলে জানান।