অবিক্রীত গরু নিয়ে বিপাকে ঝিনাইদহের খামারিরা (ভিডিও)
#ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহ জেলায় আনুমানিক ১৭ হাজার অবিক্রীত গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছে খামারি ও গৃহস্থরা। এ অবিক্রিত গরুর আনুমানিক মূল্য হবে ১০০ কোটি টাকা।
এ গরু আগামী বছর কোরবানির পশু হাটে বিক্রির জন্য এক বছর পালতে হবে। অথবা স্থানীয় হাটবাজারে কসাইদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হবে। এমনকি সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আলোচিত গরু ৩৫ মণ ওজনের যুবরাজও বিক্রি হয়নি।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার কোরবানির পশু হাটগুলোতে বিক্রির জন্য জেলার ২৩৭টি খামারে ৫৫ হাজার ৮৯৬টি গরু মোটাতাজা করা হয়। দেশি জাতের পাশাপাশি ফ্রিজিয়ান, নেপালি, সিন্ধি ও শাহীওয়াল জাতের গরু মোটাতাজা করা হয়। কোরবানির মাসখানেক আগে থেকে এসব গরু ২৭টি পশুহাটে বিক্রির জন্য উঠতে থাকে। এবার শুরুতেই বাজারে ক্রেতা কম ছিল। কোরবানি সপ্তাহখানেক আগে প্রচুর গরু ওঠে হাটগুলোতে। দামও গত বছরের চেয়ে কম ছিল। বড় বড় সাইজের গরুর ক্রেতা স্থানীয় বাজারগুলোতে একেবারেই কম ছিল। ৪০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা দামের গরুর চাহিদা বেশি ছিল। তাও সব গরু বিক্রি হয়নি। অনেক ব্যাপারী হাট থেকে গরু কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে নিয়ে যায়। গৃহস্থরাও নিয়ে যায়। সেখানে নিয়েও সব গরু বিক্রি হয় না।
শৈলকুপা উপজেলার দহকুলা গ্রামের বেপারী ইসলাম উদ্দিন জানান, তিনি ৮০টি গরু ঢাকার আবতাবনগর পশু হাটে নিয়ে যান। ৪০টি লোকসান দিয়ে বিক্রি করেছেন। বাকি ৪০টি গরু ফেরত এনেছেন। এত গরু লালন-পালন করা কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। স্থানীয় হাটবাজারে কসাইদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হবে। তিনি বলেন, বেড়বাড়ি গ্রামের বরকত আলি বেপারীর ৩৬টি গরু অবিক্রীত রয়েছে।
যুবরাজের মালিক শাহ আলম বলেন, যুবরাজসহ তিনটি বড় সাইজের গরু ঢাকার গাবতলী হাটে নিয়ে যান। একজন যুবরাজের দাম ২৭ লাখ টাকা বলে কেটে পড়ে। আর ক্রেতা মেলে না। শেষে গরুটি বাড়ি ফিরিয়ে এনেছেন। গত বছরও এ গরুটি ঢাকাতে নিয়ে যান। বিক্রি হয় না। আরো এক বছর পালতে হবে। তিনি জানান, ঢাকার পশু হাটগুলোতে বড় গরুর ক্রেতা খুব কম ছিল। অন্য দুটি গরু লোকসান দিয়ে বিক্রি করেছেন।
হাবিবপুর গ্রামের বেপারী তোবারক হোসেন বলেন, তিনি ১৯টি গরু ঢাকাতে নিয়ে যান। ১৪টি গরু কম দামে বিক্রি করেছেন। বিক্রি না হওয়ায় পাঁচটি গরু ফেরত এনেছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান জানান, এবার ঝিনাইদহ জেলায় চাহিদা অতিরিক্ত গরু কোরবানির পশুহাটে বিক্রির জন্য হূষ্টপুষ্ট করা হয়। তিনি বলেন, ২৫ থেকে ৩০ ভাগ গরু অবিক্রীত রয়েছে। গো খাদ্যের দামও চড়া। অবিক্রীত গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা বলে তিনি জানান।