মরণ নেশা জুয়ার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ এসপি’র জিহাদ ঘোষনা
#ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলাতেই বিভিন্ন জেলা থেকে মাইক্রোবাস, প্রাইভেট সহ বিভিন্ন পরিবহনে করে জুয়াড়িরা আসত জুয়া খেলতে। রাতভর চলত এই জুয়া খেলা। তবে সে চিত্র পাল্টে দিয়েছেন ঝিনাইদহের বর্তমান পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ।
জানা গেছে, জুয়া খেলা বন্ধে ব্রিটিশ আমল থেকেই জুয়া আইন রয়েছে, যেখানে তাৎক্ষনিক জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে এই আইনের কঠোর প্রয়োগে বা জুয়া বন্ধে বিভিন্ন সময়ে তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সহ প্রশাসনের মধ্যে । বিপরীতে সংঘবদ্ধ জুয়াড়ীরা পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে টাকা দিয়ে নিবিঘ্নে এই ভয়ংকর নেশার খেলা জুয়া চালিয়ে আসছিল।
তবে স্বদিচ্ছা, সততা আর দায়িত্ববোধের জায়গাতে অবিচল থেকে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার ঝিনাইদহ থেকে স্থায়ীভাবে জুয়া উচ্ছেদ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ।
অনুসন্ধ্যানে দেখা গেছে, বহুবার জুয়ার নেশা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেও অনেকে শেষ পর্যন্ত জুয়া খেলা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারে না। আর এতে ব্যাক্তি, পারিবারিক, সামাজিক সহ বৃহত্তর পরিসরে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। ঘটে আইন শৃঙ্খলার অবনতিও। নগদ টাকা-পয়সা খুঁইয়ে জুয়ার টাকা জোগাড় করতে গহনা বন্ধক, গরু-ছাগল বিক্রি, জমাজমি বিক্রি করতেও দেখা গেছে, ঘটেছে পারিবারিক বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনাও।
অনেক সময় জুয়ার কারণে এলাকায় চুরি-ছিনতায় সহ নানা অপরাধ কার্যক্রম দেখা দেয় ।
বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এসব জুয়া খেলার সাথে স্থানীয় কিছু সমাজপতি, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, বড় বড় রাঘোব-বোয়াল, হোমরা-চোমড়া, সন্ত্রাসী, গ্যাংগ্রুপদের অংশ গ্রহণও দেখা যায় ।
যে জুয়া খেলা যুগের পর যুগ স্থায়ী ভাবে চলে আসছিল তা বন্ধে কিভাবে সফল হলেন ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার? এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান পিপিএম জানান, ‘স্বদিচ্ছা সবার আগে রাখতে হবে তাহলে অনেক কিছুই সম্ভব।
তিনি বলেন, স্বদিচ্ছা, দায়িত্ববোধ আর সততার উপর দাঁড়াতে চেষ্টা করেছেন’ তিনি। জুয়া বন্ধ করা অনেকটা কঠিন ব্যাপার ছিল উল্লেখ করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘জুয়াড়ীরা অনেক সময় মোবাইলে আননোন নাম্বারে অর্থের অফার, তদবির আর নানা চ্যালেঞ্জও ছুড়েছে । এদের মোকাবেলা করতে, ধড়পাকড় করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কে কখনো কখনো কঠোর অবস্থানে যেতে হয়েছে’ ।
পুলিশ সুপার বলেন, ঝিনাইদহের জুয়া, মাদক সহ নানা অপরাধের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে কাজ করতে সর্বদা সহায়তা করে আসছেন বর্তমান খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড.খন্দকার মহিদ উদ্দিন ।
তিনি বলেন, জুয়া বন্ধে ব্রিটিশ আমল থেকে একটি আইন রয়েছে, সেটির প্রয়োগের চেষ্টা করেছেন ।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার হিসাবে যোগ দেন হাসানুজ্জামান পিপিএম । আর যোগদানের পর থেকেই আইন- জেলার শৃঙ্খলা উন্নতির নানা চেষ্টার পাশাপাশি তিনি জুয়ার আসর বন্ধে পদক্ষেপ নেন এবং এটি বন্ধে সফল হন।