পানির অভাবে ঝিনাইদহের নদ-নদীতে মাছের সংকট
#ঝিনাইদহের চোখঃ
বর্ষা প্রায় শেষ। এখনো পর্যন্ত ভারী বর্ষণ না হওয়ায় ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদী ও খাল-বিল প্রায় পানিশূন্য।
https://www.youtube.com/watch?v=Y-5uuoK5LsA
দেশীয় মাছের প্রজনন ও বিচরণ ক্ষেত্রগুলো পানির অভাবে শুকিয়ে যাওয়ায় জেলার সব অঞ্চলে দেশীয় মাছের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
এভাবে চলতে থাকলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা জেলার দায়িত্বশীল মৎস্যকর্তাদের।
ভারতীয় সীমান্তবর্তী এ জেলায় নদ-নদী আছে ১২টি। ৩৫টি বাঁওড় ও ১০৪টি বিলের পাশাপাশি আছে ৪৩টি খাল এবং ২৭ হাজার ৬৪৯টি পুকুর। ১ হাজার ৯৪৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষের বসবাস। জেলার মানুষের বাৎসরিক মাছের চাহিদা ৩৮ হাজার ৭৯১ মেট্রিক টন। চলতি বছর সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় দেশীয় মাছ উৎপাদন একেবারে নিচের দিকে থাকবে বলে আশঙ্কা জেলার মৎস্য বিভাগের।
কালীগঞ্জ উপজেলার বেগবতি নদীর পাড়ের প্রবীণ কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, একটা সময় বর্ষাকালের শুরুতেই জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চিত্রা, বেগবতি, ভৈরব বুড়িগাং, কাজুলির বিল, দিঘার বিলসহ বিভিন্ন বাঁওড় ও মাঠ-ঘাট নতুন পানিতে ভরে উঠতো। সে সময় এলাকার মানুষ জলাশয় থেকে প্রচুর পরিমাণে দেশীয় প্রজাতির মাছ সংগ্রহ করতেন।
জেলার শৈলকুপা শহরের বুক চিরে বয়ে গেছে কুমার নদ। এই নদের জেলে সুশান্ত কুমার দেব জানান, কয়েক বছর আগেও দিনের বেশিরভাগ সময় মাছ ধরেই কাটতো। বর্ষায় ব্যস্ততা আরও বেড়ে যেত। কিন্তু এখন বর্ষা পার হয়ে গেলেও পানির দেখা নেই।
কালীগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র মৎস্যকর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান রেজা বলেন, পানি না থাকায় অনেক দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে মাছের প্রজননের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া নদীতে পলি জমে ভরাট হওয়ার কারণে নাব্য হারিয়ে খরস্রোতা নদীগুলো এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।
জেলা মৎস্য জরিপ কর্মকর্তা মুজিবর রহমান জানান, বৃষ্টির পানির অভাবে দেশীয় মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। তবে এ জেলায় বাঁওড় বেশি থাকায় মোট বাৎসরিক চাহিদার তুলনায় বেশি মাছ উৎপাদন হয় বলে যোগ করেন তিনি।