কালীগঞ্জটপ লিড

ঝিনাইদহে রুগীর পেটের মধ্যে কাপড়ের টুকরা (মফ) রেখেই সেলাই

সুলতান আল একরাম, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঘটনাটা ঘটিয়েছে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলা শহরে অবস্থিত ফাতেমা প্রাইভেট হাসপাতালে। জানা যায় গত ১০ই জানুয়ারি রোজ বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের ভাটাডাঙ্গা গ্রামের মোসারেফের স্ত্রী চামেলী (২৭) কে ঝিনাইদহ শহরে প্রাইম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অপারেশন করে ডাঃ মাছুদুল হক নামের এক ডাক্তার। অপারেশন করার পর রুগীর পেটের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে রক্ত পরিষ্কার করার কাপড়ের টুকরা (মফ)। যাহা দেখে ডাক্তার নিজেই হতভঙ্গ হয়ে পড়ে।

চামেলীর স্বামী মোসারেফে জানায় যে গত ডিসেম্বর মাসের ১৩ তারিখে কালীগঞ্জ বাসস্টান্ডে ফাতেমা প্রাইভেট হাসপাতালে আমার স্ত্রী কে সন্তান প্রসব করানোর জন্য ভর্তি করি। তখন ঐ হাসপাতালে আমার স্ত্রী কে সিজার করে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়। তারপর আমরা তাকে বাড়ী নিয়ে যাই। কিন্তুু আমার স্ত্রী সুস্থ্য হয় না। পুনরায় আমারা ঐ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করি কিন্তুু ৭৫ হাজার টাকা খরচ করার পর ও সুস্থ্য হয় না। তখন গত ৮ তারিখে ফাতেমা হাসপাতাল থেকে আমাদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। তখন সদর হাসপাতালের ডাক্তার বলে যে রোগীর অবস্থা ভাল না বলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। এই অবস্থায় আমার এক আত্মীয়র মাধ্যমে ঝিনাইদহ প্রাইম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করে ডাঃ অপারেশন করলে রোগীর পেটের মধ্যে রক্ত পরিষ্কার করা কাপড়ের টুকরা (মফ) পাওয়া যায়। সেই সাথে প্রায় ২ কজি মত দুর্গন্ধযুক্ত পুজ রক্ত বাহির হয়।

এই প্রসঙ্গে অপারেশনকারী ডাঃ মাছুদুল হকের সাথে কথা বললে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন যে অপারেশন করে চামেলির পেটের মধ্যে থেকে (মফ) পাওয়া গেছে। তাছাড়া প্রায় ২ কেজি মত পুজ রক্ত পেটের মধ্যে জমা হয়ে ছিল। পূর্বে যে ডাক্তার অপারেশণ করেছিল সে ভুল বসত এই মফ রেখে সেলাই করে দেয়।
কালীগঞ্জে অবস্থিত ফাতেমা প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক একরামুল হকের সাথে কথা বললে সে বলে যে গত মাসের দিকে চামেলীকে আমার হাসপাতালে ডাক্তার আব্দুল্লাহ কাফী সিজার করে। তারপরে সে বাড়ি চলে যায় এবং ঠিক মত চিকিৎসা না হওয়ার কারনে ইউট্রাস ইনফেকশন হয়। তাছাড়া তার পেটের মধ্যে (মফ) থাকার কথা না।

ডাঃ আব্দুল্লাহ কাফীর সাথে কথা বললে যে বলে যে আমি কালীগঞ্জে অনেক দিন অপারেশন করিনে। অনেক সময় কালীগঞ্জ এ এমন ঘটনা ঘটেছে যে আমার নাম করে ক্লিনিক মালিকরা অনেক কাজ কর্ম করে। তবে আমি আগে বেশ কিছু অপারেশন করেছি বলে স্বীকার করে। বর্তমানে সে ঢাকায় অবস্থা করছে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। উল্লেখ্য যে ফাতেমা হাসপাতালের দেয়ালে ডাঃ আব্দুলা কাফী উল্লেখ আছে যে সে একজন এমবিবিএস, এফ সি পি এস, সার্জারি শেষ বর্ষ।

এই প্রসঙ্গে ঝিনাইদহ জেলা সিবিল সার্জন রাশেদা সুলতানা বলেন যে ঘটনা আমি জানি না তবে সঠিক হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button