কালীগঞ্জ আ’লীগের সম্মেলন, ব্যানার ফেষ্টনে বর্ণিল সাজ-সজ্জা
সাবজাল হোসেন, ঝিনাইদহের চোখঃ
দীর্ঘ ১৫ বছর পরে সম্মেলন। তাই সাজ সাজ রব সবখানে।
মহাসড়কের দু’ধার, শহরের মধ্যকার সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে ছেয়ে গেছে দলের নেতানেত্রীর সাথে স্থানীয় সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেষ্টনে। ইউনিয়ন পর্যায়ের বাজার ও স্থাপনা সমুহের সামনেও এগুলোর কমতি নেই। শহরের মধ্যকার সড়ক ও দলীয় কার্যালয়ে করা হয়েছে আলোক সজ্জা। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ এখন যেন ব্যানার ফেষ্টনের শহর।
এমন সুসজ্জিত জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে সরকারী ভুষন হাইস্কুলের মাঠে তৈরীকৃত নৌকা আকৃতির বিশাল মঞ্চে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ আ’লীগের কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। এ দিনের ঘোষিত কমিটিতে নিজেকে তুলে ধরতে নেতারা যাচ্ছেন কাউন্সিলরদের বাড়ি বাড়িতে। আর কাউন্সিলরেরা যোগ্যতার বিবেচনায় মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছেন কাকে করবেন কোন পদের নেতা। কিন্ত তারপরও নতুন কমিটিতে ভালো পদে স্থান পেতে অনেকের খাওয়া ঘুম নেই। বর্ষিয়ান থেকে শুরু করে সাবেক ছাত্রনেতারাও অনেকে আসতে চাচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ পদে।
এদিকে নতুন কমিটিতে কারা নেতৃত্বে আসছেন তা নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যেও চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। চায়ের দোকান ও লোক সমাগমের স্থানগুলোতে কাউন্সিল ঘিরে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। তারা কাউন্সিলর না হলেও কেউ একজনকে এগিয়ে রাখলেও অন্যজন এগিয়ে রাখছেন আরেকজনকে। কিন্ত সম্মেলনের কাউন্সিলরদের ভাষ্য, দলের সাংগাঠনিক ভীত মজবুত করতে ত্যাগী ও দলের প্রতি নিষ্ঠাবান যোগ্যরাই স্থান পাবেন এ কমিটিতে।
দলটিরসূত্রে জানাগেছে, সর্বশেষ গত ২০০৪ সালের ২২ এপ্রিল কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময়ে সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান সভাপতি ও বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর প্রায় ১৫ বছর গড়িয়ে গেলেও কাউন্সিল হয়নি।
নতুন কমিটিতে পদ পদবীর আশায় প্রথম সারির নেতারা তদবির শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদের জন্য একাধিক নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। সভাপতি পদে বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের নাম নেতাদের মুখে মুখে। তবে সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিকী ঠান্ডুর নামও আসছে। সাধারন সম্পাদক পদে সাবেক সাধারন সম্পাদক ইসরাইল হোসেন, যুবলীগের কেন্দ্রিয় নেতা ও কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মতিয়ার রহমান মতি, সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু, ঝিনাইদহ জেলা বারের সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিন্টুর কথা নেতাদের মুখে শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও এ পদে অন্য কেউ নেতা হয়ে আসলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কাউন্সিলরদের কেউ কেউ বলছেন কাউন্সিলে বিশেষ চমকও আসতে পারে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান ও বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য পারভিন জামান কল্পনা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন বর্তমান সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার আর সভাপতিত্ব করবেন সাবেক সাংসদ আব্দুল মান্নান।
সম্মেলন উপলক্ষে শুক্রবার রাতে সম্মেলন প্রস্তত কমিটির সদস্য সচিব সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সম্মেলন সফল করতে একাধিক প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা প্রায় ১৫ দিন ধরে কাজ করছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পরে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাই সকল নেতাকর্মিদের মাঝে উৎসবের আমেজ দেখা যাচ্ছে। শহর সেজেছে নতুন সাজে। সম্মেলনে ২৫ থেকে ৩০ হাজারের অধিক নেতা কর্মী শতস্ফুর্ত ভাবে অংশগ্রহন করবে বলে ধরা হচ্ছে। সম্মেলন শেষে দেশে বিদেশী সংগীত শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার। জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত এবারের সম্মেলন স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে যোগ করেন সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার।