ঝিনাইদহ চন্ডিপুর মাদ্রাসাটি ৩ যুগেও এমপিও ভুক্ত হয়নি
মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চন্ডিপুর পাইনজাত দাখিল মাদ্রাসাটি প্রায় ৩৬ বছরেও এমপিও ভুক্ত হতে পারেনি।
দীর্ঘ তিন যুগ সময়ে এমপিও ভুক্ত হতে না পেরে প্রতিষ্ঠানকালিন অনেক শিক্ষক স্বেচ্ছায় অবসরে চলে গেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে যে সকল শিক্ষকগুলো এসেছিল সর্বশেষ সরকারের নীতিমালায় এমপিও ভুক্ত হতে না পেরে তাদের মধ্যেও চরম হতাশা বিরাজ করছে। পরিবার নিয়ে তারা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।
প্রতিষ্ঠানের সহ-সুপার আমির হুসাইন বলেন, ১৯৮৫ সালে অবিভক্ত ৭৫ শতক জমির উপর মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬-৮৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি পাঠ দানের জন্য সরকারি ভাবে অনুমোদন গ্রহন করে। এরপর পাঠদান চলতে থাকে। ১৯৮৬-২০০০ সাল পর্যন্ত তিনবার প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত হতে ব্যর্থ হন প্রতিষ্ঠানটি। এরপর শিক্ষকরা চাকুরি ছেড়ে অন্যত্রে চলে যেতে থাকেন। এক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের উপক্রম হয়।
তিনি আরও জানান, ২০০৩ সালের দিকে আমরা আবার প্রতিষ্ঠাটি শুরু করি। কিন্তু সে সময় সরকারি নিয়মানুযায়ি আবার ২০০৫ সালে অনুমোদন নিতে হয়। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, পরীক্ষার ফলাফল এবং শিক্ষকগন এমপিও ভুক্তির আশায় নিরালস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয়বারেও দুইবার আমরা এমপিও ভুক্তি করতে পারেনি। সর্বশেষ সরকারের ঘোষনানুযায়ি শিক্ষার্থী, অনুমোদন, শিক্ষার্থী উত্তীর্ণসহ বিভিন্ন শর্ত পুরণ করে আমরা এমপিও ভুক্তির দাবি রাখি। কিন্তু এবারও এমপিও ভুক্তি হতে পারেনি। এনিয়ে নিজেদের মধ্যে যেমন হতাশা বিরাজ করছে, তেমনি পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্ঠের জীবন পার করতে হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠান শুরু থেকে পিয়ন পদে চাকুরি করেন জহির উদ্দিন, নানা কষ্ঠের মধ্যেও তিনি প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যাননি। তিনি জানান, লেখা পড়ার দৌড় বেশি দুর নেই। যে কারনে এখানেই শেষ পরিনতি কি হয়, তা দেখার জন্যই ছিলাম। কিন্তু বয়স শেষ দিকে এসেও সম্প্রতি সরকারের ছাড়ে এমপিও ভুক্ত হতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ইচ্ছে ছিল শেষ বয়সে হলেও হয়তো সরকারের বেতন ভাতা খেয়ে মরতে পারবো। কিন্তু তা মনে হয় আর হবেনা। এখন তিনি পরিবার পরিজন ও গ্রামবাসির নিকট এক প্রকার হাসির পাত্র হয়ে গেছে বলে জানান।
এবিষয়ে মাদ্রাসার সুপার মো. ওলিউল্লাহ বলেন, প্রতিষ্ঠান সকল সময়ই ভালো ফলাফল করে আসছে। কিন্তু ২০১৭ সালে দাখিল পরীক্ষায় ১৩ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। কিন্তু সকলেই পাস করেছিল। আর ২০১৮ সালে ২১ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করে ২০ জন। এছাড়া পূর্বেও বছর গুলোতেও ২০ শিক্ষার্থীর উপর পাস করে আসছে। কিন্তু ২০১৭ সালে ১৩ শিক্ষার্থী পাশের ব্যাপারটি সরকারের নিয়মের মধ্যে পড়েনা। যেটা আমাদের মন্দ ভাগ্যই বলতে হবে। তাছাড়া এবছরও জেডিসি পরীক্ষায় ৩৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছে। ফলাফল ভালোই হবে বলে তিনি জানান।
মাদ্রাসার সভাপ্রতি মীর কামরুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটি বরাবারই ভালো ফলাফল করে আসছিল। কিন্তু সরকার যে নীতিমালা করেছে। সেখানে আমরা অর্থাৎ ২০১৭ সালের ফলাফলের জন্য হয়তো বাদ পড়ে গেছি। যেখানে আমাদের মন্দকপাল ছাড়া আর কিছুই নয়। কারন ওই বছর ছাড়া বিগত সকল বছরই আমাদেও নীতিমালার মধ্যে আছে।