ঝিনাইদহ-সহ পশ্চিমের জেলাগুলোতে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজ চাষ
ঝিনাইদহের চোখঃ
বাজারে পেঁয়াজের দাম চড়া থাকায় এবার পশ্চিমের জেলাগুলোতে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। চাষিরাও বাম্পার ফলন আশা করছে। ইতিমধ্যে আগাম চাষ করা হালি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। এতে দাম কিছুটা কমেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে যশোর জেলায় ১ হাজার ৪৪০ হেক্টরে, ঝিনাইদহে ৮ হাজার ৬৫০ হেক্টরে, মাগুরায় ৯ হাজার ১৫ হেক্টরে, কুষ্টিয়ায় ১২ হাজার ১৪০ হেক্টরে, চুয়াডাঙ্গায় ৯৫০ হেক্টরে ও মেহেরপুরে ২ হাজার ২৫ হেক্টরে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৮১১ হেক্টর বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে।
মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো মাঠে শুধু পেঁয়াজ আর পেঁয়াজ। চাষিরা খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত। ইতিমধ্যে আগাম চাষ করা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার দেশের অন্যতম প্রধান পেঁয়াজের হাট ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পাইকারি প্রতি কেজি মুড়িকাটি পেঁয়াজ ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর নতুন ওঠা হালি পেঁয়াজ ১০০ টাকা থেকে ১০২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। খুচরা দাম কমেছে কেজিপ্রতি ৩০-৪০ টাকা।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সোন্দাহ গ্রামের চাষি হাবিবর রহমান জানান, গত বছর সাড়ে পাঁচ বিঘাতে পেঁয়াজ চাষ করেন। বিঘাপ্রতি ৮০ মণ করে ফলন হয়েছিল। পেঁয়াজ ওঠার পর দাম ৭০০/৮০০ টাকা ছিল। সর্বশেষ তিনি তিন মণ পেঁয়াজ ৮ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করেন। ভালো লাভ হয়েছিল। এবারো সাড়ে পাঁচ বিঘাতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি অফিসার সনজয় কুমার কুন্ডু বলেন, এ উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টরে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। ১ লাখ ৪০ হাজার টন পেঁয়াজ উত্পাদন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মেহেরপুর জেলায় সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়। এ পেঁয়াজ আগে উঠে।
তেরঘরিয়া গ্রামের চাষি জিয়াউর রহমান জানান, বাজারে দাম চড়া থাকায় অপরিপক্ব পেঁয়াজ উঠাচ্ছে চাষিরা। এ পেঁয়াজ পাইকারি ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে।
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আনিসুজ্জামান খান বলেন, এ উপজেলায় এবার ৯১০ হেক্টরে সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। বাজারে দাম চড়া থাকায় অপরিপক্ব পেঁয়াজ তুলে ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। এতে ফলন কম পাচ্ছে। গত বছর এসময় দাম ছিল সাড়ে চার টাকা কেজি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলি জানান, এবার পশ্চিমের জেলাগুলোতে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। কোনো রোগবালাইয়ের আক্রমণও নেই। আশা করি, ভালো ফলন হবে। কিছুদিনের মধ্যে দাম কমে আসবে।