ঝিনাইদহের চোখঃ
যে মুহুর্তে দেশে ফুল চাষ ও বিপনন একটি লাভ জনক খাতে পরিনত হতে চলেছে সেই মুহুর্তে এই খাতের অশনি সঙ্কেত প্লাস্টিকের ফুল। প্লাস্টিকের ফুল আমদানি বন্ধের জোর দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির নেতৃবৃন্দ।
রোববার (১৬ ফেব্রয়ারি) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাণিজ্যিকভাবে ফুল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সম্ভাবনাময় সেক্টর হিসেবে বর্তমানে দেশের ২৫ জেলার ছয় হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল উৎপাদন করা হচ্ছে। প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ফুল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে উৎপাদিত ফুলের আকার ও আকৃতি দিয়ে তৈরি প্লাস্টিকের ফুল দেশে আমদানি করছেন কিছু ইভেন্ট ব্যবসায়ী। এই প্লাস্টিকের ফুলের কারণে দেশের এই সেক্টরটি এখন ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২০১০ সালে দেশে ফুলের বার্ষিক বাজারমূল্য ছিল ৫৫০ কোটি টাকা। ২০১৯ যা দাঁড়ায় ১৫০০ কোটি টাকা।
লিখিত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এক সময় বিদেশ থেকে কোটি টাকার কাঁচা ফুল আমদানি হতো। কিন্তু এখন সেই আমদানি নির্ভরতা অনেটাই কমে গেছে। এখন দেশের এই সম্ভাবনাময় শিল্পকে ধ্বংস করতে প্লাস্টিকের ফুল আমদানির চক্রান্ত চলছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, প্লাস্টিকের ফুল পরিবেশের জন্যে ক্ষতিকর, স্বল্পসংখ্যক মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ, বেকারত্ব বৃদ্ধি ও দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। অবিলম্বে সরকারকে এটি রোধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের ৭০ভাগ ফুল উৎপাদন হয় যশোরে ফলে প্লাস্টিকের ফুল সেই বাজার দখল করলে এখানেই বেকারত্বের হার বেড়ে যাবে বলে মনে করেন ফুল চাষীরা।
নেতৃবৃন্দ প্লাস্টিকের ফুল আমদানি বন্ধ, গণ সচেতনতা বৃদ্ধি, আমদানি করা ফুলের উপর ৫০০ শতাংশ ট্যাক্স ও ভ্যাট বৃদ্ধি, সরকারি সব অনুষ্ঠানে প্লাস্টিকের ফুল ব্যবহার বন্ধ এবং সব অনুষ্ঠানে কাঁচা ফুলের ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ প্লাস্টিকের ফুল আমদানি বন্ধ, গণসচেতনতা বৃদ্ধি, আমদানি পুলের ওপর ৫০০ শতাংশ ট্যাক্স ও ভ্যাট বৃদ্ধি, সরকারি সব অনুষ্ঠানে প্লাস্টিকের ফুল ব্যবহার বন্ধ এবং সব অনুষ্ঠানে কাঁচাফুলের ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য মীর বাবরজান বরুণ, মাহবুব হাসান, রনি আহমেদ, জমির আহমেদ, ঝিনাইদহের গিয়াসউদ্দিন, ফজলুর রহমান খান, জামির হোসেন, রুহুল আমীন, তরিকুল ইসলাম, জাকির হোসেন, জমির উদ্দীন সহ শতাধিক ফুল চাষী। যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা জেলার ফুল চাষীরাই মূলত ফুল চাষের অগ্র পথিক। ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রনালয়ের সচিবকে সোসাইটি নেতৃবৃন্দ বিষয়টি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।