বয়স্ক ভাতা প্রদানে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে কালীগঞ্জ ইউএনওর অনন্য নজির
ঝিনাইদহের চোখঃ
বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি বন্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনন্য নজির।
সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভাতার তালিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতি। সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের এই তালিকায় সামাজিক নিরাপত্তার ভাতা বণ্টন উন্মুক্ত পদ্ধতিতে যাচাই-বাছাইয়ের নিয়ম থাকলেও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন হতো না। তবে, এবার অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন এক ইউএনও। উন্মুক্ত পদ্ধতি নীতিমালা অনুসরণ করে যেখানে আবেদন সেখানেই যাচাই-বাছাই করে তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
ভাতাপ্রাপ্তির কার্ড করাতে এসেছেন, কিন্তু তার দুই বিঘা জমি থাকায় কার্ড হয়নি। তবে, তারই সামনে ভূমিহীন আরেকজনের কার্ড হতে দেখে তিনি অবশ্য খুশি হয়েছেন। আবার বয়স হয়েছে কিন্তু সুস্থ আছেন বলে কার্ড হয়নি, কার্ড পেয়েছেন তার পেছনে দাঁড়ানো প্রতিবন্ধী একজন। তিনিও খুশি এই স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনায়। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন আর ১টি পৌরসভায় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে এভাবে ২ হাজার ৭৮০জনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পৃথক কমিটি রয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে ভাতা প্রদানে নিয়োজিত দুই কমিটিই জনগণের কাছে যাবে এবং সবার উপস্থিতিতেই প্রকাশ্যে যাচাই-বাছাই করবে।
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রাণী সাহা বলেন, ‘নতুন এই নিয়মে যারা ভাতা নিতে ইচ্ছুক তাদের সবাইকে লাইনে এসে দাঁড়াতে হচ্ছে। আর যখন কার্ড করানোর জন্য লাইনে এসে দাঁড়াচ্ছেন তখন অন্যরা বলে দিচ্ছেন কে গরীব বা কে কার্ড পাওয়ার যোগ্য না। এমনকি লাইনে দাঁড়ানোর ফলে অন্য ব্যক্তিরা জানিয়ে দিচ্ছেন তার অর্থনৈতিক অবস্থা। এতে, দুর্নীতি বন্ধ এবং স্বচ্ছতা আনা সম্ভব হয়েছে।’
এ বিষয়ে কালীগঞ্জের ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আগে যে প্রক্রিয়া ছিল তাতে অনেক অনিয়ম হতো, এতে চেয়ারম্যানরাও অনিয়ম করতো। কিন্তু, এখন যে প্রক্রিয়া তা খুবই স্বচ্ছ।’
এই পদ্ধতিতে যাচাই-বাছাই বাস্তবায়ন হওয়ায় প্রকৃত সুবিধা পাচ্ছে অসহায় মানুষ।