বাণিজ্যিকভাবে ঝিনাইদহে তেজপাতা চাষ/স্বল্প খরচে অধিক লাভ
ঝিনাইদহের চোখঃ
তেজপাতা একটি মসলা জাতীয় ফসল। তেজপাতা চাষ হতে পারে দেশের অর্থনৈতিক খাতের আর একটি বড় মাধ্যম। দেশের প্রায় সর্বত্রই এই তেজপাতার গাছ দেখা যায় এর চাষ পদ্ধতি সহজ ও কম ব্যয় সাধ্য হওয়ায় এখন অনেকেই তেজপাতা চাষাবাদের দিকে ঝুঁকেছে। তবে ইতোমধ্যেই দেশের বেশকিছু এলাকায় এটির বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে।
দেশের যে কয়েকটি জেলায় তেজপাতার বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু হয়েছে তারমধ্যে ঝিনাইদহ একটি অন্যতম। এই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তেজপাতার চাষ হচ্ছে । এটির চাষ পদ্ধতি ও অল্প জমিতে কম শ্রম খরচেই অধিক ফলন পাওয়া যায় বলে অনেকেই এর চাষ শুরু করে দিয়েছেন।
সুন্দরপুর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নে প্রায় ১৬ বিঘা জমিতে আবাদ হচ্ছে। রোগ বালাই তেমন না থাকায় এবং ফসলের তেমন ক্ষতি না থাকায় এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বছরে লাভ করা যায়।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাদিরকোল গ্রামের কৃষক জয়নুদ্দিন বলেন, ১০০টি গাছ দিয়ে তেজপাতার চাষ শুরু করলেও বর্তমানে তার বাগানে গাছ আছে ৪০০টি । মাত্র ৪০ হাজার টাকা ব্যয় করে বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকার তেজপাতা বিক্রি করে থাকেন।
তিনি বলেন, তেজপাতা চাষ করতে তেমন কো্ন পরিশ্রমের কিংবা খরচের প্রয়োজন পড়েনা আর এর রোগবালাইও কম তাই চাষাবাদে তেমন কোন লোকসানের ঝুঁকি থাকেনা। বাজারে তেজপাতার ব্যাপক চাহিদা থাকায় দামও ভাল পাওয়া যায় তাই এটি বেশ লাভজনক।
ঐ অঞ্চলের আর এক তেজপাতা চাষি আবুল কালাম আজাদ জানান, এবছর তিনি তার তেজপাতা বাগান থেকে ২৩মন তেজপাতা সংগ্রহ করেছেন। এছাড়াও আগামী মৌসুমে ২০মন তেজপাতা পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। বছরে দুইবার তেজপাতা সংগ্রহ করা যায় আর দাম ভাল পাওয়া যায় বলে এই অঞ্চলের অনেকেই তেজপাতা চাষে ঝুঁকছেন বলে তিনি যোগ করেন।
এলাকার অন্য তেজপাতা চাষীরা জানান, তেজপাতা চাষ করতে তেমন কোন পরিশ্রমের প্রয়োজন পড়েনা। রাসায়নিক সার কিংবা তেমন কোন সেচেরও প্রয়োজন পড়েনা আর একটি গাছ অনেক বছর পর্যন্ত পাতা দিতে পারে তাই একবার একটি গাছ বড় হলে তা থেকে প্রতি বছর ফসল পাওয়া যায় । বর্তমানে প্রতিকেজি তেজপাতা শুকনা পাইকারী বাজারে ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও কাঁচা পাতা ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে তারা যোগ করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃপাংশু কুমার জানান, তেজপাতার চাষ সহজ ও কম ব্যয় সম্পন্ন হওয়ায় এটির চাষাবাদ অত্যন্ত লাভজনক। এই গাছের তেমন কোন রোগবালাইয়ের প্রার্দুভাব থাকেনা আর দেশ জুড়ে এটির ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে চাষিরা দামও পাচ্ছে ভালো। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা দিয়ে সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।