দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি- এম এ কবীর (সাংবাদিক)
ঝিনাইদহের চোখঃ
কেউ বলছেন, আপনারা ভালো থাকুন। তবে মানুষ আজ ভালো নেই। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর বাতাসে শুধু লাশের গন্ধ। ঘরে ঘরে কান্নার রোল। লাশের শেষকৃত্যও কেউ করতে পারছে না। প্রিয়জনেরা পারছে না অংশ নিতে। পিতার লাশ কীভাবে দাফন হলো জানে না পুত্র। আর পুত্রের খবর জানে না পিতা। মা জানে না সন্তানের কথা। সন্তান জানে না মায়ের কথা।
বড় বড় রাষ্ট্রনায়কেরা বসে বসে লাশ গুনছেন। তারা বলছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি।
চারদিক থমথমে। কোথাও কেউ নেই। সবাই নিজ নিজ গৃহে বন্দি। বের হলেই বিপদ। রাস্তায় মিটমিটে আলো। মানুষের এমন অসহায় অবস্থা আগে কেউ কোনোদিন দেখেনি। সুপার পাওয়ারদের যেন আর কোন ক্ষমতাই নেই। মৃত্যুর মিছিল চলছে।
যুদ্ধ দেখিনি। মা বাবার কাছে গল্প শুনেছি। গা ছমছম করতো। বাবা এক রাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য ঘর ছেড়েছিলেন। দাদী পালিয়ে গিয়েছিলেন দূরের গ্রামে। দাদী বাবার শোকে ৯ মাস এক ঘরে এক বিছানায় শুয়ে দিন কাটিয়ে দিয়েছিলেন। ভাবতাম বন্দি জীবন কেমন হয়। কিভাবে বাঁচে মানুষ। দমবন্ধ হয়ে আসে কি! খোলা আকাশের নিচে না হেঁটে একদিনও বাঁচা যায়না। আরও যত প্রশ্ন। এ সকল প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল ২০২০ সালে। যেন বিশ্বযুদ্ধ চলছে। অবরুদ্ধ জীবন আমাদের। বিচ্ছিন্ন গোটা দেশ। গোটা বিশ্ব। এ যুদ্ধের শেষ কোথায় কেউ জানে না। ক্ষণে ক্ষণে আঁতকে উঠছেন সবাই।
যতই বলি আমরা বিশ্ব জয় করেছি, নভোমন্ডল, চিকিৎসা বিজ্ঞান আমাদের হাতের মুঠোয়। একটি মাত্র বোমায় ধ্বংস করতে পারি পৃথিবী। মানুষের কাছে এ সবই সম্ভব । কিন্তু অদৃশ্য শক্তি জয় করা কি সম্ভব। বহু বছর , বহুকাল, বহুদিন পাড়ি দিয়েছি। এই মুল্যবান দিনগুলো কিভাবে কাটিয়েছি আমরা। প্রশ্ন করি কি কখনো নিজেকে? বাঁচাতে পেরেছি কি আমরা অন্যায়, জুলুম, ব্যভিচার , মিথ্যা, শিরক এসব থেকে নিজেকে? এতটা কাল আমরা অবকাশ যাপন করেছি। যা খুশি তাই করেছি। এভাবে আমরা পাকড়াও হবো কোনদিন ভাবিনি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যে অপমানজনক শাস্তির হুশিয়ারি দিয়েছেন তা মানুষ উপেক্ষা করে গেছে। ভয়ানক এই দিনেও কি আমরা নিজেদের শুধরাতে পেরেছি। তাহলে এমন দিনেও কি চাল চুরির খবর আসতো। আসুন আমরা ক্ষমা প্রার্থনা করি।