এই করোনাকালে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকবেন যেভাবে
ঝিনাইদহের চোখঃ
মহমারী করোনাভাইরাসে স্থবির সারা দুনিয়া। ঘরে ঘরে বন্দী মানুষ। স্বভাবতই নানা শঙ্কা, আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা ভর করছে মানে। সেই সাথে অচলাবস্থার কারনে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে তার প্রভাব সবার উপরেই কমবেশি পড়বে। এমন সব নেতিবাচক ভাবনায় মুষঢ়ে পড়ারই কথা। কিন্তু এই নেতিবাচক ভাবনা দেহমনে নিয়ে আসতে ক্ষতিকর প্রভাব।
কী ভাবে মুক্তি পাবেন এই পরিস্থিতি থেকে
এই অস্থিরতায় একটা রুটিন বানিয়ে ফেলুন। বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করছেন মানে আপনার স্বাভাবিক রুটিন কিন্তু অনেকটাই বদলে গিয়েছে। কাজেই এই সময়ের জন্য আমাদের একটা নতুন রুটিন বানিয়ে নিতে হবে। তার জন্য আমাদের ঘুমের প্যাটার্নটা একটু বদলে নিতে হবে। রাত জেগে কাজ করার অভ্যেস ছাড়তে হবে। রাতে ঘুম পেলে ঘুমিয়ে পড়ুন। আর সকালে ওঠার জন্য ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখবেন না। স্বাভাবিক ভাবেই ঘুমটা ভাঙতে দিন। এতে প্রথম ক’দিন আপনি একটু বেশি ঘুমোতে পারেন। কিন্তু খুব শিগগিরই ছন্দ চলে আসবে। তখন আর অসুবিধে হবে না।
দুপুরে একেবারেই ঘুমোবেন না। বাড়িতে থাকলে দুপুরে খাওয়ার পর চোখ জড়িয়ে আসতে পারে ঘুমে। কিন্তু ঘুমোবেন না। তাতে আপনার অফিসের কাজ তো বটেই, এমনকী, রাতের ঘুমও নষ্ট হয়ে যাবে। তবে আগের রাতে যদি একদমই ঘুম না হয়ে থাকে, তবে একটু চোখ বুজে নিতে পারেন। খুব বেশি হলে মিনিট দশ-পনেরোর জন্য।
দুপুরে ঘুম এড়াতে শোওয়ার ঘরে বসে কাজ করবেন না। তাতে বিছানায় গা একটু এলিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা হতে পারে। তাই কাজের সময় শোওয়ার ঘরটা এড়িয়ে চলুন। বিছানায় নয়, চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করুন। প্রয়োজনীয় স্টেশনারি হাতের কাছে রাখুন। ঘড়ি ধরে কাজ করুন, যেমনটা অফিসে করেন। তাতে খানিকটা অফিসে বসে কাজ করার মতো মনে হবে।
রাতে ঘুম না হওয়া রুখতে দিনে কফি খাওয়ার পরিমাণ কমান
এমনিতেই অতিরিক্ত ক্যাফিন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই ঘুমের সমস্যা থাকলে বিকেলের দিকে বা সন্ধ্যার পর কফি না খাওয়াই উচিত। কফির নেশা থাকলে দিনের বেলায় খান। তবে দু’তিন কাপের বেশি নয়। কিন্তু সন্ধ্যা বা রাতের দিকে একেবারেই নয়।
আর সারা দিন বাড়িতে বসে বসে কাটাবেন না। কিছু শারীরিক কসরত করুন। বাড়ির বারান্দায় বা ছাদে হাঁটুন, জগিং করুন। ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজও করতে পারেন। কিছু না হলে সিঁড়ি ভেঙে ওঠা-নামা করুন। ব্যায়ামটা দিনের শুরুতেই করে ফেললে সারা দিন বাড়তি এনার্জি পাবেন।
রাতের খাবারও খুব দেরি করে খাবেন না। ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে টিভি বন্ধ করে দিন। এড়িয়ে চলুন মোবাইল। ঘরের আলো কম রাখুন। ঘরের পরিবেশ যেন যথাসম্ভব আরামদায়ক থাকে। ঘুম না এলেও রোজ নির্দিষ্ট সময়ে শুতে যান।
আর এড়িয়ে চলুন যাবতীয় দুশ্চিন্তা। আপনি যদি ক্রনিক অনিদ্রার রোগী না হন, শুধু বাড়তি মানসিক চাপ বা অবসাদের জন্যই অনিদ্রায় ভুগতে শুরু করেন, তা হলে আপনার প্রথম কাজ মানসিক চাপ কমানো। মনকে বোঝান, যে বিষয়গুলোর উপর আপনার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করেও লাভ নেই। এর পরেও ঘুম নিয়ে সমস্যা হলে কাউন্সেলিং করাতে পারেন।