জানা-অজানা

লকডাউন প্রত্যাহারের আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৬ পরামর্শ

ঝিনাইদহের চোখঃ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনাভাইরাসের মহামারির বিস্তার রোধে আরোপ করা লকডাউন তুলে নিতে শুরু করেছেন, শিথিল করছেন বিধিনিষেধ। তবে লকডাউন তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে সব দেশকে ছয়টি পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এসব শর্ত পূরণ হলেই কেবল লকডাউন তুলে নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে সংস্থাটি।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গত বুধবার অনলাইন ব্রিফিংয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস এই ছয় পরামর্শ দেন। পরামর্শগুলো হলো:

১. জোরদার নজরদারি, রোগীর সংখ্যা কমা ও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসতে হবে। ২. প্রত্যেক রোগী চিহ্নিত, পৃথক্‌করণ, পরীক্ষা ও চিকিৎসা করা এবং রোগীর সংস্পর্শে আসা সব ব্যক্তিকে শনাক্ত করার সক্ষমতা স্বাস্থ্যব্যবস্থার থাকতে হবে।

৩. স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও নার্সিং হোমের মতো বিশেষ ব্যবস্থাগুলোয় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি কমে আসতে হবে।

৪. কর্মস্থল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অন্য যেসব জায়গায় মানুষকে যাতায়াত করতে হয়, সেসব স্থানে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

৫. বিদেশফেরত ব্যক্তিদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকতে হবে।

৬. ‘নতুন স্বাভাবিকতায়’ সমাজের সবাইকে সজাগ ও সংশ্লিষ্ট করতে হবে এবং এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের ক্ষমতায়ন করতে হবে।

লকডাউন তুলে নেওয়ার আগে এই ছয় বিষয়ে নজর দিতে দেশগুলোকে সতর্ক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, যদি দেশগুলো অন্তর্বর্তী সময়টায় খুব যত্নবান না হয় এবং ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ শিথিল না করে, তাহলে মহামারি আবারও ছড়িয়ে পড়ার কারণে আবার লকডাউনের পথে হাঁটতে হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, এপ্রিলের শুরু থেকে বিশ্বজুড়ে দৈনিক গড়ে প্রায় ৮০ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার তথ্য পাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কিন্তু এই রোগীরা শুধু সংখ্যা নয়, তারা কারও মা, কারও বাবা, কারও ছেলে, কারও মেয়ে, কারও ভাই, বোন কিংবা বন্ধু।

তেদরোস আধানোম বলেন, পশ্চিম ইউরোপে নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা কমলেও ইউরোপের পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চল ও আমেরিকায় প্রতিদিনই রোগী বাড়ছে। যদিও বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের ভেতরে স্থানভেদে সংক্রমণের ধারার ভিন্নতা রয়েছে। এ কারণেই প্রতিটা দেশ ও প্রতিটা অঞ্চলের মহামারি মোকাবিলায় নিজস্ব পদ্ধতি থাকা প্রয়োজন।

তেদরোস আধানোম বলেন, প্রতিটা দেশের জন্যই বয়স্ক জনগোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ মনোযোগী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সংকট অব্যাহত থাকলে অসমতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কাজেই ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা ও সেবাকে অগ্রাধিকার দিতে বিষয়টি এখনই এবং দীর্ঘ মেয়াদে চিহ্নিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা এই মহামারির শেষ ততক্ষণ টানতে পারব না, যতক্ষণ অসমতা চিহ্নিত করতে না পারব। কারণ, অসমতাই এই মহামারিকে উসকে দেওয়া হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button