ঝিনাইদহ, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলার নমুনা থেকে করোনার জিনোম সিকুয়েন্স তৈরি করলো যবিপ্রবি
ঝিনাইদহের চোখঃ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) গবেষকরা করোনাভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য উন্মোচন করছেন। নড়াইল, ঝিনাইদহ ও বাগেরহাট জেলার নমুনা থেকে তিনটি জিনোম সিকুয়েন্স তৈরি করেছেন তারা। এর মাধ্যমে এসব জায়গায় করোনার বিস্তার গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে জানা যাবে।
বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন এই তথ্য জানান। দেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যবিপ্রবি করোনা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার অনুমোদন পায়। এই পর্যন্ত এই ল্যাবে পাঁচ হাজার ২৭০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জিনোম সিকুয়েন্সগুলো ইতোমধ্যে বিশ্বখ্যাত জিনোম ডাটাবেস সার্ভার জিআইএসএআইডি-তে জমা দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে জিনোম সিকুয়েন্স করেছে, সেখানে অপেক্ষাকৃত নবীন বিশ্ববিদ্যালয় হলেও নমুনা প্রসেসিং, ভাইরাস শনাক্ত, নিউক্লিক অ্যাসিড পৃথককরণ থেকে শুরু করে জিনোম সিকুয়েন্স সব যবিপ্রবির গবেষকরা নিজেরাই করেছেন। ঢাকার বাইরে এই প্রথম কোনও ল্যাবে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স করা হলো।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, ‘এই জিনোম সম্পর্কিত বিশ্লেষণ আমাদের গবেষকরা করছেন। এই অঞ্চলের ভাইরাসের বৈশিষ্ট নিয়ে গবেষণা প্রবন্ধ শিগগিরই আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের জন্য পাঠানো হবে। ভবিষ্যতে এর মাধ্যমে রোগীদের সংক্রমণের তীব্রতার কারণ জানা যাবে।’
তিনি জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অত্যাধুনিক অ্যানিমেল হাউস ও গ্রিন হাউস তৈরি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে বিএসএল-৩ ল্যাবরেটরি স্থাপন করে দুরারোগ্য ব্যাধি প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরিসহ আরও উচ্চমানের গবেষণা করতে গবেষক দল প্রস্তুত আছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে যবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, ‘এই ল্যাবে যাতে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়, তার জন্য একটি দুষ্টু চক্র ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল। এই ল্যাবে নমুনা পাঠানো প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সবার সহযোগিতায় সেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা গেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবি ল্যাবে চলমান পরীক্ষণ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ড. ইকবাল কবীর জাহিদ, ড. সেলিনা আক্তার, ড. শিরিন নিগার, ড. তানভীর আহমেদ ও কিবরিয়া ইসলাম প্রমুখ।