ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্ববালিয়াডাঙ্গা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৫ জনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
শুক্রবার ভিকটিম ওই গৃহবধু নিজেই বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পর্ণোগ্রামী নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি দায়ের করেন। তবে পুলিশ এখনও পর্যন্ত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সাথে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
ভিকটিম জানায়, তার স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর তিন মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। গত ৫/৬ মাস যাবৎ সাঈদ হোসেন নামে একজন তাকে মোবাইলে ফোন দিতো। বিভিন্ন সময়ে ফোনে উত্ত্যক্ত করতো এবং ফোন দেওয়ার বিষয়ে কারো কাছে বললে আমাকে ও আমার সন্তানদের মেরে ফেলার হুমকি দিতো। তিনি ভয়ে কাউকে কিছু বলেননি। এছাড়া সে ফোন দিয়ে নানা সময়ে কুপ্রস্তাব দিতো। এরপর ৩০ জুন মঙ্গলবার ঘটনার দিনগত রাতে সাঈদ ফোন দিয়ে আমাকে ঘরের বাইরে আসতে বলে। দরজা না খুললে ভেঙে ঘরে ঢুকবে। মানসম্মানের ভয়ে তিনি ঘরের দরজা খুলতেই তারা ৩/৪ জন আমকে বাড়ির পিছনের একটি আমবাগানে নিয়ে যায়। এরপর আমাকে তারা জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং মোবাইলে সেই দৃশ্য ধারণ করে। তিনি অজ্ঞান হয়ে মাঠের মধ্যে পড়ে থাকেন। ২/৩ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরে আসলে তিনি বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে আছেন দেখতে পান। এরপর তিনি আস্তে আস্তে উঠে বাড়িতে চলে আসেন।
তিনি আরো জানান, ঘটনার পরদিন সকালে আমি কাউকে কোন কিছু জানানোর আগেই তারা আমাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে শুরু। যেন আমি কাউকে কিছু না বলি। কাউকে কিছু বললে তারা আমার সন্তানের অনেক ক্ষতি করবে ও ধর্ষণ করা ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে।আমি এই ভয়ে চুপ থাকি। এরপর তারা আমাকে ফোন দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। নাহলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখায়।
আমি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের কাছে থাকা ওই ভিডিও কয়েককজন কে দেখালে পরে বিষয়টি লোক জানাজানি হয়। সর্বশেষ এ ব্যাপারে শুক্রবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার গৃহবধু ৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মতলেবুর রহমান জানান, ভিকটিম গৃহবধু নিজেই বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ৯ (৩) এবং পর্ণোগ্রামী নিয়ন্ত্রণ আইন ৮ (১)/৮(২) ধারায় থানায় মামলা করেছেন। মামলা নং-৯। তারিখ-১০/০৭/২০২০ ইং। আসামিরা পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতারে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।