ড্রাগন ফল চাষে সফল ঝিনাইদহে সামাদ
ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাণিজ্যিক ভাবে বিদেশী ফল ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মোঃ সামাদ নামের এক যুবক।
তার দেখাদেখি এলাকায় অনেক কৃষক এবং যুবক এই ড্রাগন ফল চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে। ড্রাগন ফল চাষী মোঃ সামাদের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের খামার মুন্দিয়া গ্রামে।
ড্রাগন ফল চাষী মোঃ সামাদ জানান, এ বছর খরচ বাদ দিয়ে তার প্রায় ৪ লক্ষ টাকা লাভের আশা করছেন। সবচেয়ে আশার কথা তিনি সম্পুর্ণ নিরাপদ উপায়ে কীটনাশক বাদে এই ফল চাষ করছেন।
কৃষক সামাদ জানান, ২০১৯ সালের প্রথম দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৬০ শত জমি লিজ নিয়ে ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেন। তার জমিতে ৪৫০টি পিলার রয়েছে। প্রত্যেক পিলারে ৪টি করে ড্রাগন গাছ রয়েছে। দেড় বছর পর থেকেই তিনি ড্রাগন ফল সংগ্রহ করতে পারছেন। গত দেড় বছরে তিনি তার বাগানে খরচ করেছেন চারা, জমি প্রস্তুত, লেবারসহ সব মিলিয়ে ৪ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে প্রায় ৩ লাখ টাকার ড্রাগন ফল তিনি বিক্রি করেছেন। আগামী ৬মাস তার বাগান থেকে আরো ৫ লাখ টাকার ড্রাগন ফল তিনি বিক্রি করতে পারবেন। একটি পিলার থেকে তিনি বছরে প্রায় ৩০ কেজি ড্রাগন ফল সংগ্রহ করতে পরবেন। বছরের ৬ মাস ড্রাগন গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা যায় বলে তিনি জানান।
কৃষক সামাদ আরো জানান, কালীগঞ্জে হাতে গোনা যে জন ড্রাগন চাষ করছেন তার মধ্যে তিনি অন্যতম। কালীগঞ্জে তার হাত ধরেই মুলত প্রথম ড্রাগন গাছ রোপন করা হয়। প্রায় ৪ বছর আগে স্থানীয় একটি পোল্ট্রি ফার্মে তিনি কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকেই ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হন। পরে চাকুরি ছেড়ে নিজেই একজন কৃষি উদ্যেক্তা হয়ে উঠেন। কৃষক সামাদ তার বাগানে দুই জনের কর্মসংস্থান করেছেন। আগামীতে তিনি আরো কয়েক বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষের প্রস্তুতি নিচেছন।
তিনি জানান, ড্রাগন ফল চাষ একটি লাভজন চাষ।মাত্র দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যেই ড্রাগন বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করা সম্ভব। তিনি সম্পুর্ণ নিরাপদ উপায়ে কীটনাশক বাদে এই ড্রাগন ফল চাষ করছেন। ড্রাগন ফুল আসার পর থেকে ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যেই ফল খাওয়ার উপযোগী হয় । ফল বিক্রেতারা তার বাগান থেকে এই ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে পাইকারী বাজারদর ২০০-২৫০টাকা। তবে অধিকাংশ সময় ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। তিনি মুলত ভিয়েতনামী লাল জাতের ড্রাগন চাষ করছেন।
তিনি বলেন, পুষ্টি গুনে ভরা এই ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে এলাকায় যদি ড্রাগন ফল সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকতো তাহলে সারা বছর এই উপজেলা থেকে ড্রাগন ফল সরবরাহ করা যেতো।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার (সম্প্রসারণ) হুমায়ন কবির আকাশ জানান, যুবক সামাদের ড্রাগন বাগানটিতে এবার ব্যাপক ফলন হয়েছে। কৃষি অফিসের তরফ থেকে সার্বিক খোজ খবর রাখা হচ্ছে। তিনি যদি কৃষি অফিসের সহযোগিতা কামনা করেন তাহলে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।